বিএস২১১ ফ্লাইট বিধ্বস্ত: ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার, তদন্ত শুরু
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৬:২৩
নেপালে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার বিএস২১১ বিমানটির ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে ব্ল্যাক বক্সে রাখা ডাটা রেকর্ডার নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ১২ মার্চ (সোমবার) রাতেই ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নেপাল সরকার।
নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজ কুমার ছেত্রীর বরাত দিয়ে নেপালের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাজ কুমার ছেত্রী জানিয়েছেন, ডাটা রেকর্ডার ইউএস-বাংলার ফ্লাইটটির ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা হয়। এটি তাদের কাছে নিরাপদে রাখা হয়েছে।
একটি উড়োজাহাজের ব্ল্যাক বক্স (Black Box) নামক একটি রেকর্ডার ডিভাইসের অংশ হচ্ছে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (Flight Data Recorder-FDR)। এটাতে ফ্লাইট সংক্রান্ত সব টেকনিক্যাল তথ্য ধারণ করা থাকে। ব্ল্যাক বক্সের আরেকটি অংশ ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (Cockpit Voice Recorder-CVR)। এই অংশটিতে প্লেনের ককপিটের ভেতর কী কথাবার্তা হচ্ছে সেগুলো রেকর্ড হয়।
ব্ল্যাক বক্সকে মজবুত ও সুরক্ষিত উপায়ে তৈরি করা হয় যেন ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্লেন গুঁড়িয়ে গেলেও এই অংশটি যথাসম্ভব অক্ষত থাকে। যেকোন দুর্ঘটনার পর ব্ল্যাকবক্সে থাকা তথ্য থেকেই তদন্তের সঠিক ফলাফল দিতে পারেন তদন্তকারীরা।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর থেকেই ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ ও ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছেন। ইউএস বাংলা বলছে, কন্ট্রোল রুম থেকে পাইলটদের বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়ায় এ দুর্ঘটনা। অন্যদিকে ত্রিভুবন কর্তৃপক্ষের দাবি, অবতরণের সময় উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন পাইলটরা।
এ ঘটনায় ইউটিউবে প্লেনের পাইলট এবং বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের মধ্যকার কথোপকথনের একটি অডিও-ও প্রকাশিত হয়েছে। তবে ওই অডিও’র সত্যতা নিয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ইউএস বাংলার বিএস ২১১ ফ্লাইটটি ১২ মার্চ (সোমবার) দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে বিধ্বস্ত হয়।
বিমানে ৬৭ জন যাত্রীদের মধ্যে পুরুষ ৩৭ ও নারী ২৮ জন ছিলেন, শিশু ছিলেন দুইজন। এর মধ্যে ৩২ জন বাংলাদেশি, ৩৩ জন নেপালি, একজন মালদ্বীপের এবং একজন চীনের নাগরিক। এছাড়া ফ্লাইটটিতে দুইজন পাইলট ও দুইজন বিমানকর্মী ছিল। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুলিশের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি, ইউএস বাংলার বিএস ২১১ ফ্লাইট বিধ্বস্তে নিহতের সংখ্যা ৫০। চিকিৎসাধীন যাত্রীদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনার পর ফ্লাইটের সহকারি পাইলট এবং ইউএস বাংলার প্রথম নারী পাইলট প্রিথুলা রশিদের প্রথমেই মৃত্যু হয়। নিজের মৃত্যুর আগে ১০ জন নেপালী যাত্রীর প্রাণ বাঁচান এই সাহসী বৈমানিক। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ১৩ মার্চ (মঙ্গলবার) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ক্যাপ্টেন আবিদ।