খালেদা জিয়ার জামিন সংক্রান্ত আবেদনের আদেশ ১১ মার্চ
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০১৮, ০০:৩৯
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আনা আবেদনের আদেশ দেয়া হবে ১১ মার্চ (রবিবার)।
বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) এ আদেশ দেয়।
আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবদীন বলেন, নিম্ন আদালত থেকে নথি আসা সংক্রান্ত আদেশের ১৬ দিন পেরিয়ে গেছে। নথি এসেছে কি না আমরা জানি না। তখন আদালত এ বিষয়ে রবিবার আদেশের জন্য ধার্য করে দেয়।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সংক্রান্ত বিষয় ৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) আদালতের নজরে (মেনশন) আনা হয়। বিষয়টি নিয়ে আদেশের জন্য আদালত রবিবার দিন ধার্য করে দেয়।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের দেয়া আদেশে বলা হয়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার নিন্ম আদালতের নথি আসার পর এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে। বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রহণ (এডমিট) করে হাইকোর্টের এ বেঞ্চ। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতে দেয়া জরিমানার দন্ডাদেশ স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের নথি ১৫ দিনের মধ্যে পাঠাতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদন্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ৬ মার্চ (মঙ্গলবার) দুপুরে ১ হাজার ২২৩ পৃষ্ঠার আপিল দায়ের করা হয়। আপিল আবেদনে নিম্ন আদালতের পাঁচ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে বিভিন্ন যুক্তি দেখানো হয়েছে। খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য সিনিয়র এডভোকেট আব্দুর রেজাক খান ফাইলিং ল’ইয়ার হিসেবে এ আপিল মামলা দায়ের করেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের অনুলিপি পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের কার্যালয় থেকে এ অনুলিপি খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এ অনুলিপি গ্রহণ করেন। রায়ের অনুলিপি নিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের কাছে রায়ের অনুলিপি ১১৬৮ পৃষ্ঠা ও আদেশ ৬ পৃষ্ঠাসহ মোট ১১৭৪ ফোলিও প্রিন্ট দেয়া হয়।
প্রকাশিত এ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সরকারি এতিম তহবিলের টাকা এতিমদের কল্যাণে ব্যয় না করে পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়াসহ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামিরা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধ করেছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছর এবং তার জ্যেষ্ঠ পুত্র দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। সাজার রায় ঘোষণার পরপরই রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। সেখানে সাজাভোগ করছেন খালেদা জিয়া।