শহীদ মিনারে প্রিয়ভাষিণীকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০১৮, ১৩:৪৯
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন মুক্তিযোদ্ধা-ভাস্কর ও নারী অধিকারকর্মী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী।
৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে প্রথমে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে। এরপর একে ব্যক্তি, সংগঠন তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ওবায়দুল কাদের।
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, নারী অধিকারে বিষয়ে সবসময় তিনি সোচ্চার ছিলেন। তার ত্যাগ নতুন প্রজন্মের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম নতুন মাত্রা যোগ করেছিলো। তার মৃত্যু এ জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
প্রিয়ভাষিণীর পরিবারের পক্ষ থেকে কন্যা ফুলেশ্বরী বলেন, সারাজীবন তিনি সংগ্রাম করেছেন। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের পাশে তার শেষ ঠিকানা পাওয়ায় আমরা গর্বিত।
মুক্তিযোদ্ধা-ভাস্কর ও নারী অধিকারকর্মী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, গণজাগরণ মঞ্চ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, সাম্যবাদী দল, স্থপতি ইনস্টিটিউট, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, নারী সংহতি, জাতীয় বিপ্লবী পার্টি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, ভিন্নধারা, কোরক নাট্য সংগঠন, গণতান্ত্রিক বামমোর্চা, বাংলাদেশ সংগীত সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় নারীজোট, নারীমুক্তি, ছায়ানট, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সমন্বয় পরিষদ, সংস্কৃতি মঞ্চ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, নন্দন কানন, জাতীয় কবিতা পরিষদ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, চারুকলা ইনস্টিটিউট, নারী সংগঠন চেষ্টা ইত্যাদি। এছাড়াও বিশিষ্ট নাট্যজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা আলাদা আলাদাভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাবি মসজিদে জানাজা শেষে বিকেল ৫টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শহীদ জননী জাহানরা ইমামের পাশে মুক্তিযোদ্ধা-ভাস্কর ও নারী অধিকারকর্মী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে সমাহিত করা হবে।
৬ মার্চ (মঙ্গলবার) দুপুরে ৭১ বছর বয়সে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই মহীয়ষী নারী। তিনি দীর্ঘদিন যাবত কিডনি, ফুসফুসসহ কয়েকটি জটিল রোগে ভুগছিলেন। তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেছিলেন, "সকল বীরাঙ্গনা নারী জাতির পক্ষ থেকে বলব- যারা সে দিন নীরবে যুদ্ধ করেছেন, অত্যাচারের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ করেছেন, ধর্ষণের মধ্য দিয়ে, অসহায়ত্বের মধ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছেন তাদেরকেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত দেওয়া উচিত"।