ঘোষণা দিয়ে স্কুলছাত্রীকে হত্যা, হত্যাকারী গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৫৬
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে স্কুলছাত্রী হুমায়রা আক্তার মুন্নীকে (১৯) ঘরে ঢুকে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মো. ইয়াহিয়া সর্দারকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২০ ডিসেম্বর (বুধবার) দিবাগত রাত ১টার দিকে সিলেটের জালালাবাদ থানার মাসুকবাজার এলাকার দরসা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দিরাই থানা পুলিশ।
২১ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বেলা সাড়ে ১০ টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ইয়াহিয়া জালালাবাদ এলাকার দরসা গ্রামে আত্মগোপনে ছিলেন। ঘটনার পর পরই সে বারবার ঠিকানা পরিবর্তন করছিল। ইয়াহিয়া মুন্নীকে হত্যা করে প্রথমে দিরাই থেকে সিলেট চলে যায়। সেখান থেকে ময়মনসিংহ, আবার সেখান থেকে সিলেটে আসে। মাঝে ঢাকায় অবস্থান করে। পুনরায় সিলেটে ফিরে আসে। যার কারণে তাকে গ্রেপ্তার করতে কিছুটা সময় লেগেছে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ বুধবার রাত একটার সময় সিলেটের জালালাবাদ থানার মাসুকবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।’
পুলিশ সুপার বলেন, ইয়াহিয়াকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের ৫টি টিম একসাথে কাজ করে। পাঁচ দিন ধরে অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ দলের সদস্যদের নগদ এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াহিয়া দাবী করেছে মুন্নীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মুন্নীর এক চাচার সাথে ইয়াহিয়া সর্দার দিরাই শহরের একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতো। সেই সুবাধে সে মুন্নীদের বাসায় আসা-যাওয়া করতো। ঘটনার দুই দিন আগে ইয়াহিয়া ওই বাসায় গিয়ে নিজের হাত কেটে রক্ত দেখায় এবং তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু মুন্নী তার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় ইয়াহিয়া নিজে মরবে এবং মেয়েটিকেও মারবে বলে হুমকি দিয়ে আসে। এরপর ইয়াহিয়া ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মুন্নীর বাসায় গিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।’
ইয়াহিয়ার দাবীর বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘ইয়াহিয়া সর্দার মুন্নীকে একাই খুন করেছে বলে স্বীকার করেছে। সে জানিয়েছে মুন্নীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল। তবে আমাদের ধারণা ইয়াহিয়ার প্রেমের প্রস্তাবের বিষয়টি এক তরফা ছিল। সববিষয় পুলিশ গভীরভাবে খতিয়ে দেখছে।’
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর (শনিবার) রাতে ঘরে ঢুকে মুন্নীকে পড়ার টেবিলেই উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে ইয়াহিয়া। মুন্নী দিরাই বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
এদিকে ঘটনার দুই দিন পর সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মুন্নীর মা রাহেলা বেগম বাদী হয়ে ইয়াহিয়া ও তানভীরকে আসামি করে দিরাই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে তানভীরকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল পুলিশ। মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।