শাজনীন হত্যাকাণ্ড, শহীদুলের ফাঁসি কার্যকর
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০১৭, ২০:০৬
আলোচিত শাজনীন হত্যা মামলার আসামি শহীদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ২৯ নভেম্বর (বুধবার) রাত পৌনে ১০টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে শহীদুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এ সময় গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. মঞ্জুরুল হক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাহেনুল ইসলাম, জেলার বিকাশ রায়হানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিকাশ রায়হান জানান, বুধবার দুপুরে শহীদুলের ছোট ভাই মুহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী, খালা, ছোট বোনসহ অন্যান্য স্বজন তার সঙ্গে কারাগারে শেষ দেখা করেছেন।
মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ফাঁসি কার্যকরের পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার ভাই মহিদুল ইসলাম লাশ গ্রহণ করেন এবং রাতেই তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেরার ডাঙ্গা দুর্গাপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
শহীদকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০১২ সালে কাশিমপুর কারাগারে আনা হয়েছিল।
১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে ব্যবসায়ী লতিফুর রহমানের বাড়িতে খুন হন তার মেয়ে শাজনীন। শাজনীন তখন ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। আর শহীদ ছিলেন ওই বাড়ির পরিচারক।
এ হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ রায় দেন।
রায়ে শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে তাদের বাড়ির সংস্কার কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান, হাসানের সহকারী বাদল, শাজনীনদের বাড়ির পরিচারক শহীদ, কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল ও গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক।
আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) ওই বছরই মামলাটি হাই কোর্টে যায়। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিলও করেন।
ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাই কোর্ট হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে। অপর আসামি শনিরাম মণ্ডল খালাস পান।
হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা চার আসামি মইনুদ্দিন হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন। ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল এই চার আসামিকে আপিলের অনুমতি দেয় সর্বোচ্চ আদালত। অপর আসামি শহীদুল পরে জেল আপিল করেন।
এর সাত বছর পর ২০১৬ সালের ২ অগাস্টে রায় দেয় আপিল বিভাগ। আসামিদের মধ্যে কেবল শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়, বাকি চারজন খালাস পান।