যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূর হাত-পা ভাঙলো স্বামী
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৪
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যৌতুকের দাবিতে সৈয়দা আফরিন আক্তার খুশি নামের এক গৃহবধূকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে তারই পাষণ্ড স্বামী আনোয়ার হোসেন বুলু। এতে তার দুই হাত, দুই পা ও কোমরের হাড় ভেঙে গেছে এবং মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন।
বর্তমানে সে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের ৩য় তলায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেঝেতে দেওয়া বিছানায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারদিন ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।
আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার শিমলা বাজার এলাকার একটি ভাড়া বাসায় স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই সন্তানের জননী সৈয়দা আফরিন আক্তার খুশি। স্বজনরা তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। গৃহবধূ সৈয়দা আফরিন খুশি ব্যথার যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। তাকে মেঝেতে বিছানা দেওয়া হয়েছে।
কর্তব্যরত চিকিত্সক জানিয়েছেন, ১৬ নভেম্বর (বুধবার) দুপুরে তার শরীরের ভাঙা স্থানগুলো এক্স-রে করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা দেওয়া হবে।
চিকিৎসাধীন গৃহবধূ সৈয়দা আফরিন জানান, তার বাবার বাড়ি সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চুনিয়াপটল গ্রামে। তার বাবা মো. আমজাদ হোসেন জামালপুরের আঞ্চলিক সেটেলমেন্ট দপ্তরের ভূমি জরিপ কর্মচারী।
আজ থেকে ১২ বছর আগে সরিষাবাড়ী পৌরসভার শিমলা বাজার এলাকার ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে তার বিয়ে হয়েছে। তাদের সংসারে দুই মেয়ে আছে। বড় মেয়ে আমেনা নার্সারিতে পড়ে। ছোট মেয়ে ফাতেমার বয়স এক বছর। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তার স্বামী আনোয়ার হোসেন বুলু ও তার স্বামীর পরিববারের সদস্যরা তাকে মাঝেমধ্যেই নির্যাতন করে আসছে। এর আগেও তিনবার সৈয়দা আফরিনকে তারা মারধর করে গুরুতর আহত করেছিলো।
ওই গৃহবধূর পিতা মো. আমজাদ হোসেন বলেন, আনোয়ার হোসেন বুলু তার মেয়েকে মেরে শুধু হাত-পা-কোমর ভেঙে দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। আনোয়ার হোসেন বুলু হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে তার শিশুকন্যা আমেনাকেও মায়ের কাছ জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে গেছে।
তিনি তার মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতনকারী মো. আনোয়ার হোসেন বুলু ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করতে আজ শুক্রবার সকালে সরিষাবাড়ী থানায় গিয়ে ডিউটি অফিসার আমিনুল ইসলামের কাছে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন।