কিশোরী আজিজাকে পুড়িয়ে হত্যায় চাচি গ্রেপ্তার

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০১৭, ২২:৩৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

নরসিংদীতে কিশোরী আজিজাকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি বিউটিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ভোররাত চারটার দিকে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৯ এর একটি দল। অন্যজন হলেন বিউটির মা হোসনে আরা।

র‍্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, সিলেটের বিশ্বনাথের একটি গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গত শুক্রবার রাতে কে বা কারা আজিজাকে (১৪) তুলে নিয়ে হাত-মুখ বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। গত শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সে মারা যায়। তার বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর থানার খৈনকুটে।

আজিজাকে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ পরিবার থেকে করা হলেও পুলিশ বলছে ভিন্ন কারণ। পুলিশ বলছে, পরিবারের ওই অভিযোগের সত্যতা মিলছে না। চাচি বিউটির অনৈতিক সম্পর্কের কথা জেনে ফেলায় আজিজার ওপর ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা নেমে এসেছিল। প্রাণ দিতে হয়েছে তাকে।

আজিজাকে হত্যার অভিযোগে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার বাবা আবদুস সাত্তার চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করে শিবপুর থানায় মামলা করেন। পুলিশ রাতেই এজাহারভুক্ত আসামি তমুজাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এজাহারে ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়েছে, ১৯ অক্টোবর আজিজার চাচি বিউটির মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ জন্য তিনি আজিজাকে দোষারোপ করেন। বিউটি ফোনটি ফেরত চান এবং হুমকি দেন, ফোন ফেরত না দিলে আগুনে পুড়িয়ে মারবেন। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মুরগির খামারের জন্য কেরোসিন তেল আনতে আজিজা খৈনকুট বাজারে যায় এবং মিজানের দোকান থেকে এক লিটার কেরোসিন তেল কিনে বাড়ির দিকে রওনা হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে রবিউল্লাহ ফরাজির বাগানে চিৎকার শুনে ও আগুন দেখে লোকজন গিয়ে পানি দিয়ে আজিজার শরীরের আগুন নেভায়। তারপর দ্রুত নরসিংদীর ১০০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আজিজাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন।

এজাহারে বলা হয়, ঢাকায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে কাতরাতে কাতরাতে আজিজা বলেছে, কেরোসিন তেল নিয়ে বাড়ি আসার সময় বিউটি, রুবেল, তমুজা, সানোয়ারা এবং আরও তিনজন জোর করে রবিউল্লাহ ফরাজির বাগানের বেলগাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে, তার হাতে থাকা কেরোসিন তেল শরীরে ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। বেলগাছে বাঁধা রশি আগুনে পুড়ে গেলে সে চিৎকার করে ছুটতে ছুটতে ১০০ গজ এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, গ্রেপ্তার তমুজা বেগম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, চাচির অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি দেখা ফেলায় আজিজাকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। আর ঘটনা ভিন্ন খাতে ঘোরাতে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দেওয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত