স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য শেষতক লড়াই করেছেন আশরাফ
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:৪২
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রাণশক্তি দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সব সময় থেকেছেন আদর্শ আর সততার পথে। আপোস ছিলো না কোন ক্ষেত্রেই। নিজের চিন্তা আর বিশ্বাসে অবিচল থেকে পথ চলেছেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন।
দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যন্সারে ভূগছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী শিলা ইসলাম। স্থানীয় সময় ২২ অক্টোবর (রবিবার) রাত ৩টার (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টা) লণ্ডনের ইউসিএলএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এর আগে গত ৯ অক্টোবর অসুস্থ স্ত্রীর পাশে থাকতে লন্ডন যাওয়ার আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দেখা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে।
এদিকে লন্ডন যাবার আগে গুলশানে জাতীয় চার নেতার নামে বরাদ্দ করা প্লট থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে হিসেবে তিনি ২ শতাংশ জমি পেয়েছিলেন। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ভাই-বোনদের কাছে তিনি সেই জমি বিক্রি করে দেন।
অনাড়ম্বড় জীবনে অভ্যস্ত এ নেতা চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে লন্ডন থেকে জার্মানি নেয়ার জন্য পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় দু’বার প্লেনের টিকিটের তারিখও পরিবর্তন করেছিলেন।
সৈয়দ আশরাফের মামাতো ভাই মইনুজ্জামান অপু জানান, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নিজেকে গুটিয়ে রেখে চলেন। সাধারণ মানুষের মত জীবনযাপন বেশি পছন্দ করেন। তাঁর স্ত্রী শীলা ইসলামের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। সে লন্ডনের একটি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ছিলেন।
সৈয়দ আশরাফের স্ত্রীর মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা প্রসংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন রাজনীতিতে সজ্জন এবং পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসাবে পরিচিত সৈয়দ আশরাফকে।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের চাচাতো ভাই এবং তার নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জের বিশ্বস্ত সহচর সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম বলেন, তিনি (আশরাফ) কখনও এসব বিষয়ে কাউকে কিছু বলতেন না। কিভাবে কি চলবে তাও না। অন্যরকম মানুষ। পরিবারের ঘনিষ্ঠরাও তেমন কিছু জানতেন না।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শীলা আশরাফ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সবসময় প্রেরণা জুগিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জবাসী একজন নিঃস্বার্থ সমাজসেবী ও নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমিক ব্যক্তিত্বকে হারালো।
শীলা ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন সহ অনেকেই।