নওগাঁয় প্রতিবন্ধী দু’সন্তান নিয়ে বিপাকে দিনমজুর পরিবার
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০১৭, ২২:১৮
প্রতিবন্ধী সন্তানদের চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রি করে দিয়েছেন উপজেলার ধামইরহাট দিনমজুর নুর মোহাম্মদ। সেই সঙ্গে সন্তানদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনতে না পেরে অনেকটা হতাশায় দিন যাপন করছে পরিবারটি।
জানা যায়, উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের ঐতিহাসিক আলতাদিঘী শালবন জাতীয় উদ্যান ঘেঁসে সীমান্তবর্তী জোওসমান গ্রামের দিনমজুর নুর মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী কাজল রেখার ঘরে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে জন্ম গ্রহণ করে। দু’সন্তানকে নিয়ে বাবা-মার অনেক আশা ছিল। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস দুটি সন্তানই প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে। মেয়ের নাজনীর নাহার (২১) ও ছেলে মাসুদ রানা (১৬)। অসহায় পরিবার প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে অনেক অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করান। তারপরও তারা স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনতে না পেরে তাদের বাবা-মা হতাশ।
নুর মোহাম্মদ বলেন, প্রতিবন্ধী সন্তানদের নিয়ে সারাদিন তার স্ত্রী কাজল রেখাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। নিজের বসতভিটা ছাড়া সম্পদ বলতে আর কিছু নেই। দু’সন্তানকে সুস্থ করার জন্য জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করিয়েও আশা রুপ তেমন ফল পাননি। তবে ভারতে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে পারলে সন্তানরা সুস্থ হবেন এমনটাই আশা করছেন তারা। কিন্তু এতে অনেক অর্থের প্রয়োজন, যা তার পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তার স্বপ্ন অর্থের কারণে বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া অন্যের বাড়িতে কাজ করে তিনি সংসার চালান। এই কাজ করে তার পক্ষে সন্তানদের চিকিৎসা খরচ চালানোও অসম্ভব।
প্রতিবন্ধীদের মা কাজল রেখা বলেন, দুটো সন্তান সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকে। কারণে আগে একটি হুইল চেয়ার ছিল, সেটিও নষ্ট হয়ে গেছে। এখন দিনরাত তাদের সঙ্গে আমাকেই থাকতে হয়। অর্থের অভাবে হুইল চেয়ারও কিনতে পারছি না। এমতাবস্থায় তিনি সরকার ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের নিকট তার প্রতিবন্ধী সন্তানদের জন্য হুইল চেয়ার ও উন্নত চিকিৎসার জন্য সাহায্যে আকুল আবেদন জানিয়েছেন। মুঠোফোন নম্বর ০১৭৬৫২৩১৫৩৯ অথবা ০১৭৪৮৭৩৩৩৪১ এর মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ধামইরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিবন্ধী দুই ভাই বোনকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয়। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিষদ থেকে সাধ্যমত সাহায্য প্রদান করা হবে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের জুলাই থেকে প্রতিবন্ধী দুই ভাই বোন প্রতি মাসে ৭০০ টাকা করে ভাতা পাবে যা অক্টোবর মাসে তিন মাসের ভাতা এক সঙ্গে প্রদান করা হবে। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার মাধ্যমে জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ ও রোগী কল্যাণ সমিতি বরাবর আবেদন করলে বিষয়টি সুবিবেচনা পূর্বক দেখা হবে।