মণিপুরী ঠাকুর পরিবারকে ধর্মান্তরের হুমকি
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০১৬, ১৬:৩০
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উত্তর বালিগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘু মণিপুরী ঠাকুর পরিবারকে উড়ো চিঠি দিয়ে ধর্ম পরিবর্তনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ প্রশাসন তদন্তক্রমে মনিপুরী ঠাকুর পরিবারে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
গত ১০ জুলাই (রবিবার) উড়ো চিঠির ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত উত্তর বালিগাঁও গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে রবিবার রাত থেকেই পুলিশি নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের উত্তর বালিগাঁও গ্রামের শেখর মুখার্জীর বাড়িতে একটি উড়ো পাওয়া যায়। একটি সাদা কাগজে হাতে লেখা ছিল মণিপুরী ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের অতি শীঘ্রই ধর্ম পরিবর্তন করতে হবে। না হলে ৩০২ ধারা কার্যকর করা হবে। এ বিষয়ে কোথাও কোন অভিযোগ করলে বা পুলিশে খবর দিলে নির্যাতনসহ চরম প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ ছিলো।
উত্তর বালিগাঁও গ্রামের মণিপুরী ঠাকুর পরিবারের ঠাকুর শেখর মুখার্জীর ছেলে নিপেন মুখার্জী বলেন, রবিবার (১০ জুলাই) সকালে একটি সাদা খামে জনাব ঠাকুর পরিবার নামে একটি উড়ো চিঠি পাওয়া যায়। উড়ো চিঠিতে ঠাকুর পরিবারের সবাইকে ধর্ম পরিবর্তনের হুমকি দেওয়া হয়। তবে কে বা কারা চিঠিটি পাঠিয়েছে তা লিখা নেই। এ ঘটনার পর মন্দিরের পুরোহিত শেখর মুখার্জী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সোমবার বিকেলে চিকিৎসক এসে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গেছেন।
এবিষয়ে কমলগঞ্জ থানার ২য় কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জাহিদুল হক বলেন, রবিবার প্রথমে তিনি উত্তর বালিগাঁও গ্রামে মণিপুরী এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে রাতেই আবার কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল আলম ও কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল হাসানকে নিয়ে এ গ্রামে গিয়ে সংখ্যালঘু মণিপুরী সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে বসে বৈঠক করে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্থ করেন।
এ সময় কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হান্নান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলেমান হোসেন ভূট্টো উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বস্থ করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে উপ-পরিদর্শক জাহিদুল হক বলেন, জোর পুলিশি তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
তবে কমলগঞ্জের সবগুলো মন্দির, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, গীর্জাসমূহে নিরাপত্তা বিধানে সব ধর্মের মানুষের সমন্নয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে মুঠোফোনে জানান ঢাকায় অবস্থানরত কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক।