কিশোরী গণধর্ষণে ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:৫৮
নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নে কিশোরী পান্না আক্তারকে গণধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচণার ঘটনায় সাত দিন পর ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জেলা ছাত্রলীগের কৃষিবিষয়ক উপসম্পাদক কৌশিক সরকার অপু ও মামুন আকন্দ। গ্রেপ্তার হওয়া দুজনই মামলার আসামি ছিলেন।
বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের বিক্ষোভ, সমাবেশ, মানববন্ধন ও আন্দোলনের চাপে ঘটনার সাতদিন পর গত ১০ সেপ্টেম্বর (রবিবার) নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা করার সুযোগ পায় কিশোরীর মা।
মামলার দুদিন পর পুলিশ ১১ সেপ্টেম্বর (সোমবার) রাতে প্রধান আসামি মামুন আকন্দকে জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরিতে বোনের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। অপর আসামি কৌশিক সরকার অপুকে নেত্রকোনা পৌর শহরের মাইক্রোস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয় ও নিহত কিশোরীর পরিবার জানায়, পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গত ৩১ আগস্ট গ্রামের বাড়িতে যায় পান্না। ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনসংলগ্ন একটি ঘরে মা-বাবার সঙ্গে থাকত সে। ঈদের পরের দিন ঠাকুরাকোনার বখাটে তরুণ মামুন কৌশলে পান্নাকে ঘরের বাইরে ডেকে নিয়ে মাছের খামারের একটি ঘরে তিন তরুণসহ ধর্ষণ করে। রাতে অনেক খোঁজার পর পান্নাকে মাছের খামারে পড়ে থাকতে দেখেন তার মা আলপিনা। এ সময় ধর্ষকরা তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয় বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য।
পরদিন সোমবার পান্নাকে বাড়িতে রেখে তার মা বেরিয়ে পড়েন। ঘরে ফিরে পাশের একটি ঘরে পান্নার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তিনি। পরে খবর পেয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পান্নার পরিবারের অভিযোগ, পান্নার মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি প্রভাবশালী মহল চেষ্টা চালাচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, কিশোরী পান্না আত্মহত্যার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরিকারী তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাক আহমদকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনূর আলমকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মামলা দায়েরের পরদিন পুলিশ মামলার মূল আসামি মামুন আকন্দকে (২৬) গ্রেপ্তার করে এবং অপর আসামি অপুকে মঙ্গলবারবিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়। আরেক আসামি সুলতানকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।