সন্তান হত্যায় মাসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০১৭, ১৯:৫০
খুলনা আড়ংঘাটা থানা এলাকার সরদারডাঙ্গা শহিদ হাতেম আহম্মেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র হাসমি (৯) কে হত্যার দায়ে মা সোনিয়া আক্তারসহ চারজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি রাব্বি সরদারকে আদালত খালাস দিয়েছেন।
আজ ২৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলরুবা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য তিনজন হলেন মো. নুরুন্নবী, মো. রসুল ও মো. হাফিজুর রহমান।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৬ সালে মানিকতলার সোনিয়ার সঙ্গে মো. হাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়। এর ছয় মাস পর হাফিজুর রহমান বিদেশে চলে যান। দেশে আসার পর পারিবারিক কলহের জের ধরে দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু হাসমি থেকে যায় বাবার সঙ্গে। পরে হাসমিকে তার বাবার কাছ থেকে অপহরণ করে আনার জন্য নুরুন্নবী ও রসুলের সঙ্গে চুক্তি হয় সোনিয়ার।
২০১৬ সালের ৬ জুন রাতে তারা হাসমিকে অপহরণ করে তার মায়ের কাছে নিয়ে আসে। এরপর সোনিয়াকে অপহরণকারীদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় হাসমি। বিষয়টি বাইরে ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে অপহরণকারীরা সোনিয়ার সামনেই হাসমিকে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর লাশটি সিমেন্টের বস্তায় ভরে খুলনা বাইপাস সড়ক সংলগ্ন সরদার ডাঙ্গা বিলে ফেলে দেওয়া হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী বীরেন্দ্র নাথ সাহা জানান, ওই বছরের ৯ জুন খুলনার কার্ত্তিককুল এলাকা থেকে হাসমির বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মো. নুরুন্নবী, হাফিজুর রহমান, মো. রসুলের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুমের মামলা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আড়ংঘাটা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান একই বছরের ৩০ জুন এজাহারভুক্ত হাফিজুর রহমান ও আসাদ ফকিরকে বাদ দিয়ে সোনিয়া আক্তার, মো. নুরুন্নবী ও মো. রসুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বাদির নারাজি আবেদনের পর পুনরায় তদন্ত শেষে সিআইডির পরিদর্শক মিঠু রানী একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর সাতজনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান। চলতি বছরের ২ এপ্রিল অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত দুজন আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।