ধর্ষক তুফানকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ২১:৫৮
বগুড়ায় কিশোরী ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি তুফান সরকারকে স্থানীয় জেলা কারাগার থেকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কড়া নিরাপত্তার মাঝে ১৯ আগস্ট (শনিবার) দুপুর ১টার দিকে তাকে স্থানান্তর করা হয়।
বগুড়ার জেল সুপার মোকাম্মেল হক জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তুফান সরকারকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তবে ধারণা করা হচ্ছে বগুড়া কারাগারে থাকা অবস্থায় দর্শনার্থী হিসেবে সাক্ষাত করতে আসা সহযোগীদের মাধ্যমে তুফান এর নিয়মিত মাদক বিশেষ করে ফেন্সিডিল সেবন নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে তুফানকে বগুড়া থেকে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
বগুড়ার জেল সুপার মোকাম্মেল হক জানান, জেলা কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় তুফান সরকার সাধারণ হাজতির মতই ছিল। তবে দর্শনার্থী কক্ষে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সহযোগীরা একদিন কোনো এক ফাঁকে তুফানকে স্যালাইনের পাইপ দিয়ে ফেন্সিডিল সেবন করানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানার পর কারাগারে ভেতরে থাকা বাবুল নামে মাদক মামলার এক হাজতির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওই ঘটনায় কোনো তদন্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জেল সুপার বলেন, 'কয়েকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ডিআইজি প্রিজন্স আলতাফ হোসেন আজ ১৯ আগস্ট (শনিবার) বগুড়া কারাগার পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি সবকিছু খতিয়ে দেখছেন।’
উল্লেখ্য, ভাল কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে গত ১৭ জুলাই বাড়ি থেকে ক্যাডার দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে এক ছাত্রীকে বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার ধর্ষণ করে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে দলীয় ক্যাডার স্ত্রী আশা ও বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেছনে লেলিয়ে দেন। গত ২৮ জুলাই বিকেলে তারা ওই ছাত্রী ও তার মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চার ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় এই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৮ জুলাই রাতে তুফান সরকার, তার স্ত্রী আশা সরকার, আশা সরকারের বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া আকতারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে দুটি মামলা করেন। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত নয়জনসহ মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে তুফান সরকারকে শ্রমিক লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে তার বড় ভাই বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিন সরকারকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে মতিন গা ঢাকা দিয়েছেন।