‘এ যেনো নতুন জীবন পেলাম’
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০১৭, ১৫:৩৩
‘কলা গাছের ভেলাকে যদি বাংলাদেশে ঢুকতে না দিতো তাহলে অনেক ভারতীয় লোকজন ধরলার পানিতে ডুবে মারা যেতো। যতদিন বেঁচে থাকবো বাংলাদেশের মানুষ ও বিজিবিকে মনে রাখবো। বাংলাদেশে প্রবেশ করার ফলে আমরা প্রাণে বেঁচে আছি।’ কথাগুলো বলেন বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া বন্যার্ত ভারতীয় নাগরিক ইকুল হক।
তিনি আরো বলেন, আমরা জীবন নিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। নইলে ধরলায় বন্যার পানিতে মৃত্যু হতো। ভারতের দিকে যাওয়ার কোন উপায় ছিলো না। আমরা ৭-৮শ লোক শিশুদের নিয়ে আটকা ছিলাম। পরে বাংলাদেশের দিকে চলে আসি। বাংলাদেশীরা ও বিজিবির লোকজন আমাদের ঢুকতে না দিলে কয়েক’শ লোকের নিশ্চিত মৃত্যু ঘটতো। এ যেনো নতুন জীবন পেলাম।
ধরলার প্রলয়ংকারী ভয়াবহ বন্যা থেকে জীবন বাঁচাতে ভারতীয় দুই গ্রামের প্রায় আট শতাধিক ভারতীয় নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার মোগলহাট ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় এসব ভারতীয় লোকজন লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মোগলাহাট ইউনিয়ন ও আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে স্থানীয় লোকজনের বাড়ি, ফাঁকা জায়গা ও পাকা রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়েছে। ভারতীয়দের মধ্যে অনেকের সাথে বাংলাদেশীদের পূর্ব পরিচয় থাকার সুবাধে বাড়িতেও আশ্রয় পেয়েছেন। এমনটাই দাবি করেন ভারতীয় দরিবাস এলাকার বাসিন্দা ছামিদুল হক।
লালমনিরহাট উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ভারতীয় কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার গীতালদহের অধীনে দরিবাস ও জারি ধরলা চর দুইটিতে প্রায় ৫ হাজার লোকজন বসবাস করে। অনেকেই ভারতে চলে গেলেও জীবন বাঁচার তাগিদে ৬-৭শ নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে এসেছে।
লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল গোলাম মোর্শেদ এ বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রায় পাঁচ শতাধিকের মতো ভারতীয় নারী-শিশু ও পুরুষ লোকজন বাংলাদেশে এসেছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ও আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় লোকজনের বাড়িতে ভারতীয় এসব লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের খোঁজখবর রাখছে বিজিবির সদস্যরা।