মামলা তুলে নিতে চাইছে সেই সাবিনার পরিবার

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০১৭, ২১:২৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

ডিম পোচ করতে গিয়ে কুসুম ছড়িয়ে যাওয়ায় বর্বর নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী সাবিনার (১১) পরিবার আর মামলা চালাতে চাইছে না। টাকার বিনিময়ে আসামিপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করছেন তারা।

আজ ৫ আগস্ট (শনিবার) সন্ধ্যায় সাবিনার বাবা মো. বাদল মুঠোফোনে বলেন, "হাসপাতাল থেকে সাবিনা একবার বাড়ি এসেছিল। বর্তমানে সে ঢাকায় গেছে আদালত থেকে মামলার কাগজ তুলতে। আসামিপক্ষ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছে, বলেছে আরও টাকা দেবে। তবে কত টাকা দেবে, তা বলেনি"।

মেয়েকে নির্যাতন করলেও মামলা চালিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই জানান তিনি।

এদিকে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পুলিশ পরিদর্শক আমেনা খাতুন বলেন, "সাবিনার মেডিকেল রিপোর্ট ও জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ২ আগস্ট (বুধবার) সিএমএইচ কর্তৃপক্ষের কাছে সাবিনার সঙ্গে দেখা করতে চাই বলে দরখাস্ত দিয়েছি। দরখাস্তের এখন পর্যন্ত কোনো উত্তর পাইনি। আর আসামি যে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন, তার একটি কপি পল্লবী থানা থেকে দিয়েছে"।

আসামির জামিন পাওয়ার বিষয়ে মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কামাল হোসেন বলেন, এটি আদালতের বিষয়। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে।

গত জুন মাসের শেষের দিকে ডিম পোচ করতে গিয়ে কুসুম ছড়িয়ে যায় বলে সাবিনার বুকে ও হাতে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেন গৃহকর্ত্রী আয়েশা লতিফ। রুটি বানানোর বেলুন দিয়ে পেটান। আঘাতে কালো হয়ে ফুলে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় সাবিনার দুই চোখ। মাথা, গলা, পিঠ, ঊরুসহ সারা শরীরেও নতুন-পুরোনো অসংখ্য দাগ। জুলাই মাসের শুরুতে ঘটনা জানাজানি হয়।

এর ছয় মাস আগে টাঙ্গাইলের সাবিনা ঢাকায় কাজ নেয় লে. কর্নেল তসলিম আহসানের বাসায়। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, শিশুটির ওপর এই নির্যাতন চালান তসলিম আহসানের স্ত্রী আয়েশা লতিফ। জানা গেছে, ঘটনার সময় তসলিম আহসান যশোর ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন।

পল্লবী থানার উদ্যোগে সাবিনাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তড়িঘড়ি উদ্যোগেই ‘উন্নত চিকিৎসা’র জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পল্লবী থানার মামলাটি ঢাকার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পুলিশ পরিদর্শক আমেনা খাতুন।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত