স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত বিলুপ্ত ছিটমহল
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০১৭, ১৭:১৪
হাতীবান্ধা উপজেলার উওর গোতামারী ১৩৫নং বিলুপ্ত ছিটমহল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লালমনিরহাট জেলায় বিলুপ্ত ভারতীয় ছিটমহলগুলোর একটি। ছিটমহলগুলোতে গত দুই বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত এ বিলুপ্ত ছিটমহলের লোকজন। অথচ নাগরিকদের মৌলিক ৪ অধিকারের মধ্যে চিকিৎসা অন্যতম।
বিলুপ্ত ছিটমহলের নেতা আজিজুল ইসলাম জানান, গত দুই বছরে উওর গোতামারী ১৩৫ নং বিলুপ্ত ছিটমহলে ১১১টি পরিবারের জন্য ৩৪টি নলকুপ, ৬৬টি পায়খানা স্থাপন করা হয়েছে। ৫৪ জনকে বিধবা ও বয়স্ক ভাতা ও ৮৩ জনকে ভিজিডি কর্মসূচীর আওতায় আনা হয়েছে। তাদের সুবিধার্থে ৭ হাজার ৯ শত ২০ মিটার পাকা রাস্তা করা হয়েছে। বেশ কিছু রাস্তা এখনো পাকাকরণ প্রক্রিয়াধীন। স্বাস্থ্য সেবার জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এসেছে।
জানা যায়, বিলুপ্ত ছিটমহলের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও উওর গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহলের লোকজন স্বাস্থ্য সেবা থেকে এখনো বঞ্চিত। ওই বিলুপ্ত ছিটমহলে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হলেও তার কোনো সুফল পাচ্ছে না লোকজন। তাদের অভিযোগ ক্লিনিকটি নিয়মিত খোলা হয় না। কোন স্বাস্থ্য কর্মী এই ক্লিনিকে আসেন না। ক্লিনিকের সাইনবোর্ডে পরিবার পরিকল্পনা সেবা, গর্ভকালীন সেবা, প্রসবোত্তর সেবা, নবজাতক সেবা, শিশু সেবা, কিশোর-কিশোরী সেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, সাধারণ রোগের চিকিৎসা, পুষ্টি সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষার কথা উল্লেখ্য করা হলেও তার কোনো সেবাই পায় না ওই বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। ওই সেবাগুলো সাইনবোর্ডের মাঝেই সীমাবদ্ধ। কয়েক দিন আগে প্রসবোত্তর সেবার অভাবে ওই এলাকার আলিম হোসেনের এক পুত্র সন্তান জন্মের সময় মারা যায়।
ওই এলাকার স্কুল ছাত্র শাহিনুর ইসলাম বলেন, কর্মসংস্থানের অভাবে আমরা অনেক পিছনে পড়ে আছি। আমাদের কর্মসংস্থান তৈরী করে দিলে আমরা মূল-ভূখণ্ডের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবো।
হাতীবান্ধার উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সাবু মিয়া বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর উন্নয়ন কাজ হলেও তারা জমি ক্রয় বিক্রয় করতে পারছে না। এটার একটা সমাধান প্রয়োজন। পাশাপাশি ওই সব এলাকায় বেশ কিছু ভূমিহীন ব্যক্তি আছে। তাদের বাসস্থান তৈরী প্রয়োজন।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রমজান আলী বলেন, ওই ক্লিনিকে জনবল বরাদ্দ নেই। যে কারণে স্বাস্থ্য সেবা দিতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তারপরও আমরা ভোলান্টিয়ার দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দিতে চেষ্টা করছি।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশেষ অগ্রধিকার দিয়ে বিলুপ্ত ছিটমহল গুলোর উন্নয়ন এগিয়ে চলছে। বিলুপ্ত ছিটমহলের লোকজনের মৌলিক অধিকারগুলো বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।