মানবতাবিরোধী অপরাধের আরো ৯ মামলা বিচারাধীন
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০১৭, ১৮:০৮
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরো ৯ মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা সূত্র জানায়, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে আরো ১১ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
একটি মামলার রায় ঘোষণা অপেক্ষমান (সিএভি) রয়েছে। ট্রাইব্যনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ২৯ তম মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা অপেক্ষমান রেখে গত ৯ মে আদেশ দেয়।
রায় ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা মামলার আসামীদের মধ্যে রয়েছেন- জামায়াতের সাবেক এমপি আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয়জন। অন্যান্য আসামিরা হলেন : মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), মো. আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), মো. নাজমুল হুদা (৬০) ও মো. আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)। এ ছয়জনের মধ্যে মো. আব্দুল লতিফ কারাগারে আছে, বাকি পাঁচজন পলাতক রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এর আগে আরো ২৮ মামলায় ৫২ আসামীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ২৩ আসামী পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষিত মামলার মধ্যে সুপ্রিমকোর্টে আপিলে ৬ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। চুড়ান্ত রায় শেষে ৬ আসামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও আপিলে আরো ১৮ মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব আপিল মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি হবে বলে জানিয়েছেন এটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্র।
আপিলে চূড়ান্ত ছয়টি রায়ের পর জামায়াতের প্রাক্তন আমীর মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, প্রাক্তন দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, জামায়াতের প্রাক্তন নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
আপিল ও আপিল রিভিউ’র আরেক রায়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত আপিল চলাকালীন দুই আসামী জামায়াত নেতা গোলাম আযম ও বিএনপি নেতা আবদুল আলীম মৃত্যুবরণ করেছেন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম প্রধান অঙ্গিকার ছিলো যুদ্ধপরাধীদের বিচার করা। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বধীন মহাজোট দুই তৃতীয়াংশের বেশি আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।
সরকার গঠনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশনেই যুদ্ধপরাধীদের বিচারে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরপর ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল, তদন্তকারী সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম গঠন করা হয়। প্রথমে ১টি ট্রাইব্যুনালে এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে এ বিচারকে ত্বরান্বিত করতে ২০১২ সালের ২২ মার্চ আরো একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
বিচারিক কার্যক্রম শেষে ট্রাইব্যুনাল-১ এ ১০টি ও ট্রাইব্যুনাল-২ এ ১১টিসহ মোট ২১টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। মামলার সংখ্যা কমায় বর্তমানে একটি ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। এ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ৭টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আরো একটি মামলা রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।