পশুর বিনিময়ে পাত্রী!
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০১৭, ২০:১০
বিয়ে হচ্ছে একটি সামাজিক বন্ধন। মানুষের জীবনে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরিনত হয়েছে। আমরা চিরকালই দেখে এসেছি বিয়ে মানে অনেক আনন্দ, উৎসব ইত্যাদি অথচ পৃথিবীর অনেক দেশেই এই বিয়ে প্রথা এমনই উদ্ভট যা নারীদের উপর ভয়াবহ বর্বরতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
কেনিয়ার পাকট সম্প্রদায়ের বিয়ে মানেই বউ কেনাবেচার বিরাট হাট। ২০টি ছাগল, তিনটি উট ও ১০টি গরুর বিনিময়ে বউ পাওয়া যায় এখানে। এজন্য মেয়ের বাবার সঙ্গে অনেক দরকষাকষি করতে হয় বরপক্ষের। অনেক ক্ষেত্রে বর তাদের উপজাতীয় গহনা দিয়ে থাকেন মেয়েকে। কেনিয়ায় উপজাতীয় এলাকায় এভাবেই একটি ছেলের হাতে মেয়েকে তুলে দেন বাবা, যেটাকে তারা বিবাহ বলে থাকেন।
কেনিয়ার উপজাতীয় এলাকায় বিশেষ করে পাকট সম্প্রদায়ের বাবারা নিজের প্রাণপ্রিয় মেয়েকে একটি ছেলের হাতে তুলে দেন পশুর বিনিময়ে। বিয়ের একমাস আগে কনেকে একটি নির্জন জায়গায় বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। এরপর বাবাদের সঙ্গে বরপক্ষের চলে ব্যাপক দরকষাকষি। যে বেশি পশু ও গহনা দিতে পারবে, তার হাতেই মেয়েকে তুলে দেন বাবা। মেয়ের অজান্তেই চলে বিবাহের এ আয়োজন। অনেকেই জানেন না, তাদের কার হাতে তুলে দিচ্ছেন বাবা। মেয়েরা বিয়ের কথা শুনলে বাড়ি থেকে পালাতে পারে এমন আশঙ্কার কারণে প্রায়ই এ বিষয়টি তাদের কাছে গোপন রাখে পরিবার।
প্রথা অনুযায়ী সর্বশেষ দিনে ও রাতে গরু বলি দেয় গ্রামের পুরুষরা। গরুর হৃদয়ে বর্শা দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর সেগুলো রান্না করে রাতভর চলে খাওয়া-দাওয়ার উৎসব। যদিও ওই অনুষ্ঠানে নারীদের প্রবেশে বাধা রয়েছে। অনেক সময় বিশেষ কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে নারীদের সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
কেনিয়ার বারিনগো কাউন্টির ম্যারিগেট শহরের ৫০ কিলোমিটারের অদূরে জঙ্গলের ভেতর বিশেষ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেনিয়ার আইনে বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ থাকলেও ১৪ বছরের মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে দেশটির উপজাতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে। বিয়ের দিন ব্যাপক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে যুবক-যবতীরা একসঙ্গে নাচে, আনন্দ করে। বাড়ি সাজানো হয় নানা রঙে।
বিয়ের দিন কনের চুল কেটে দেওয়া হয়। পরানো হয় নিজেদের ঐতিহ্যের পোশাক। কেউ বাবার বাড়ি থেকে যেতে না চাইলে জোর করে ধরে নিয়ে যায় বরপক্ষ। কান্নাকাটির রোল পড়ে যায় সে সময়। কিন্তু মেয়ের পরিবার এ বিষয়ে বরপক্ষকে সহায়তা করে থাকেন।