যে গান শুনে আত্মহত্যা করেছে একঝাঁক প্রাণ!
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০১৬, ১৩:১০
গান শুনতে সবাই ভালোবাসে। গান পছন্দ করে না এমন লোক খোঁজে পাওয়া দুষ্কর। কথায় আছে ‘যে গান ভালোবাসে না সে মানুষ হত্যা করতে পারে।’ একটি গান আপনার মন খারাপ করিয়ে দিতে পারে। আপনাকে হয়তো ডুবিয়ে দিতে পারে হতাশার সমুদ্রে। একটি গান মানুষকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে এমনটি শুনে অসম্ভব মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তব কখনও কল্পনার সুদূরতম গণ্ডিকে অনায়াসে অতিক্রম করে যায়। এটা তেমনই একটি বিষয়। গানটির নাম ‘গ্লুমি সানডে’। তবে যারা গানটি সম্পর্কে জানেন, তারা এই গানটিকে ‘হাঙ্গেরিয়ান সুইসাইড সং’ হিসেবেও চেনেন।
হাঙ্গেরির পিয়ানোবাদক রেজসো সেরেস ১৯৩৩ সালে এই গানটিতে সুর দিয়েছিলেন এবং গেয়েছিলেন।
রহস্য ঘেরা গানটি ঘিরে রয়েছে বহু মিথ। যেমন এক মহিলার কথা শোনা যায় যিনি গানটি প্লেয়ারে চালিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। এক দোকানদারের সুইসাইড নোটে পাওয়া গিয়েছিল এই গানের কথাগুলি। এমন নানা ঘটনায় আবৃত একটি গান, যা চালানোর আগে অনেকেই দ্বিতীবার ভাবেন।
সেরের যখন পেট চালাতে তিনি মরিয়া হয়ে লড়াই চালাচ্ছেন সেই সময় সেরেস গানটিতে সুর দিয়েছিলেন। গানটির নেপথ্যে একটি গল্প রয়েছে। সেরেসের হাতে তখন কানাকড়িও নেই। কী করে একবেলার খাবার জুটবে, সেই চিন্তা গ্রাস করেছে তাকে। তার উপরে বান্ধবীও তাকে ছেড়ে চলে গেছে । এই অবস্থায় সেরেসের হাতে আসে গানটি। গানটি লিখেছিলেন সেরেসের বন্ধু, কবি লাজলো জ্যাভর। অনেকেই ধারণা করেছেন, সেরেসের কষ্ট তার বন্ধু জ্যাভর অনুধাবন করেছিলেন। অন্য ব্যাখ্যায় বলা হয়, জ্যাভরের বান্ধবীই তাকে ত্যাগ করেছিলেন। তৃতীয় ব্যাখ্যায় বলা হয়, মূল কবিতাটি নেমে এসেছিল সেরেসের কলম বেয়েই। সেটিকে অদলবদল করে গানের আকার দেন জ্যাভর।
এই গানটি রেকর্ড করেছিলেন প্যাল ক্যামার। গানটির রেকর্ডিং প্রকাশিত হওয়ার পরেই হাঙ্গেরিতে পরপর আত্মহত্যা ঘটতে থাকে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর এবং পুলিশের কাছে তথ্য একত্র করলে দেখা যাবে, হাঙ্গেরি এবং আমেরিকায় সেই সময়ে অন্তত ১৯টি আত্মহত্যার সঙ্গে এই গানটির যোগসূত্র ছিল। পরে গানটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৯৬৮ সালে ঘরের জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিয়ে সেরেস নিজেই আত্মহত্যা করেন।
এখানেই আত্মহত্যার কাহিনী শেষ নয়। এরপরেও খবর আসতে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ইংল্যান্ড, জার্মানি, হাঙ্গেরি— সর্বত্র আত্মহত্যার সঙ্গে জড়িয়ে যায় গানটি।