‘সেলফি’ মৃত্যুর কারণ!
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০১৬, ১৭:১২
সেলফি বর্তমান সময়ে একটি মানসিক রোগের সাথে তুলনাযোগ্য। এই সেলফি নিয়ে সারা বিশ্বে কোথাও না কোথাও দূর্ঘটনা ঘটছে। মারাও যাচ্ছে মানুষ এই সেলফির কারণে! বহুবার সতর্ক করা হলেও কানে নেয়না কেউই যতোক্ষণ না কোনো বিপদ আসে। আর সেই বিপদই ডেকে আনে মৃত্যু। গত দুই বছরে ভারতে পঞ্চাশটিরও বেশি মৃত্যুর কারণ সেলফি। শুধুমাত্র এই সেলফি নিতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকে।
মুম্বাইয়ে আরব সাগরের তীরে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে পা পিছলে জলে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল তিন যুবতীর। তাদের বাঁচাতে গিয়ে মারা যান অন্য এক যুবক।
চলন্ত ট্রেনের কাছে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে জানুয়ারি মাসে উত্তরপ্রদেশেই মারা গিয়েছিলেন তিন কলেজ শিক্ষার্থী। ওই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া তাঁদের এক চতুর্থ সঙ্গী পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে চলন্ত ট্রেনটার খুব কাছে গিয়ে এক দু:সাহসিক সেলফি তুলে সামাজিক সাইটে পোস্ট করার ইচ্ছে ছিল তাদের।
মার্চ মাসে পাঞ্জাবের পাঠানকোটে এক ১৫বছরের কিশোর তার বাবার গুলি ভর্তি পিস্তল নিজের কপালে ঠেকিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে মারা যায়। ভুলক্রমে পিস্তলের ট্রিগার টেনে দিয়েছিল সে।
আর বুধবার (২২ জুন) উত্তরপ্রদেশের কানপুরে মুষলধারে বৃষ্টির সময় গঙ্গায় সাঁতার কাটতে নামার আগে ‘সেলফি’ তুলতে গিয়ে পা পিছলে গঙ্গায় পড়ে যান শিবম (১৯) নামের এক তরুণ। তাকে উদ্ধার করতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তারই সঙ্গে গঙ্গায় সাঁতার কাটতে আসা মাকসুদ। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে গঙ্গায় তখন ভীষণ স্রোত ছিল। শিবম আর মাকসুদ তলিয়ে যেতে থাকলে বন্ধুদের বাঁচাতে একে একে পানিতে ঝাঁপ দেন তাদের আরও পাঁচ বন্ধু। কিন্তু স্রোতের সঙ্গে লড়াই খুব বেশিক্ষণ চালাতে পারেননি কেউই। ডুবুরি নামানো হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে সাতজনেরই দেহ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সবাইকেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এদের মধ্যে মাকসুদের বয়স ৩০ এর ওপরে কিন্তু বাকিরা সকলেই ১৯ থেকে ২১ বছর বয়সের।
সেলফি তুলতে গিয়ে পৃথিবীতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে লেবাননে। এখন সেলফি তুলতে গিয়ে পৃথিবীতে যতজন মারা যান, তার প্রায় অর্ধেকই ঘটনাই ভারতের। ‘সেলফি’ তোলার হিড়িক আটকাতে মুম্বাই পুলিশ শহরের ১৬ টি জায়গাকে ‘নো সেলফি জোন’ বলে চিহ্নিত করেছে, যেখানে সেলফি তোলা নিষিদ্ধ।