ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্র!
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০১৬, ০০:২৫
উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্র তৈরি করছে ফেসবুক। যন্ত্র কি মানুষের মতো ভাবতে পারে? গবেষকেরা ভাবছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্র হয়তো মানুষের কাছাকাছি আসতে পারবে। শুরু হয়ে গেছে এ রকম উন্নত স্মার্ট বা চটপটে যন্ত্র বানানোর কাজ। বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের তৈরি স্মার্টফোনসহ অন্যান্য ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধার যন্ত্রে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করার পাল্লা দিতে শুরু করেছে।
কম্পিউটিংয়ের দুনিয়ায় বিপ্লব হিসেবে দেখা হচ্ছে এই প্রচেষ্টাকে। কারণ এই স্মার্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করে যন্ত্রের সঙ্গে স্বাভাবিক কথোপকথন চালানো যায়। পাশাপাশি পণ্যের ফরমাশ দেওয়া, রাস্তার খোঁজখবর নেওয়া, রেস্তোরাঁ ঠিক করে রাখা কিংবা ইন্টারনেটে অনুসন্ধানের মতো নানা কাজের নির্দেশ দেওয়া যায় যন্ত্রকে।
এসব প্রোগ্রামের যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করা হচ্ছে তার লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের একজন ভার্চ্যুয়াল বন্ধু তৈরি করা। এই বন্ধুর সঙ্গে যত বেশি যোগাযোগ হবে, তা তত বেশি বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় খুব উঠেপড়ে লেগেছে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল। গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই একে স্মার্টফোনের মতো শক্তিশালী এক পরিবর্তনের শক্তি বলে উল্লেখ করেছেন।
গুগলের সম্প্রতি বাজারে আনা পিক্সেল ব্র্যান্ডের ফোনে ‘গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ নামের উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমান সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। অ্যাপলের ‘সিরি’ সফটওয়্যারকে টেক্কা দিতে এই সফটওয়্যারকে উন্নত করেছে গুগল। গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করে ব্যবহারকারী তাঁর ডিভাইস ও ক্লাউডে তথ্য সাজাতে ও ব্যবহার করতে পারবেন। ই-মেইল, ক্যালেন্ডার ব্যবহার খবরাখবর, আবহাওয়াসহ নানা তথ্য জানতে ব্যবহার করা যাবে এ সফটওয়্যার।
স্মার্টফোনের জন্য অ্যালো মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন ও গুগল হোম হাব নামের যন্ত্রেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করেছে গুগল।
শুধু গুগল নয়, সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় প্রবেশের আগ্রহ দেখিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। সম্প্রতি অ্যাপলের সিরির প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোগে তৈরি যুক্তরাষ্ট্রের স্টার্টআপ বা উদ্যোগ ভিভ ল্যাবসকে অধিগ্রহণ করেছে স্যামসাং। তাদের ভাষ্য, স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন, টিভি থেকে শুরু করে সব যন্ত্র ও পণ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ভিভ ল্যাবসকে অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
গুগলের বিনা মূল্যের অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যার চালিত স্মার্টফোন তৈরি করে বিশ্বের শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতা স্যামসাং। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম টাইজেনও রয়েছে। টাইজেনে কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমান যুক্ত করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
২০১৪ সালে ইকো হোম অ্যাসিস্ট্যান্ট নামে একটি কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে চালানো যায় এমন স্পিকার বাজারে এনেছে আমাজন। এতে ব্যবহৃত হয়েছে ‘অ্যালেক্সা’ নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম। এই যন্ত্রকে খবর জানাতে বা কোনো তথ্য জানাতে বললে সে তথ্য জানাতে পারে। ‘ডট’ নামে একটি ছোট আকৃতির যন্ত্র ও ফায়ার টিভিতেও অ্যালেক্সাকে যুক্ত করেছে আমাজন।
মাইক্রোসফটের তৈরি ব্যক্তিগত ভার্চ্যুয়াল সহকারীর নাম করটানা। উইন্ডোজচালিত যন্ত্র, এক্সবক্স কনসোল ছাড়াও আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে অ্যাপ হিসেবে করটানা পাওয়া যায়। ২০১৪ সালে করটানা চালু করে মাইক্রোসফট। হ্যালো নামের গেমের চরিত্রের নামে এর নামকরণ করা হয়।
গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, আমাজন ছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমান সহকারী নির্মাণে বিশাল বিনিয়োগ করেছে ফেসবুক। ‘এম’ কোডনামে ফেসবুক তৈরি করছে ভার্চ্যুয়াল বন্ধু।
তথ্যসূত্র: এএফপি