প্রতিরোধের মার্চ
১৯৭১ এর উত্তাল ১৬ মার্চ
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০১৭, ১৪:৩৫
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার জন্য ১৫ মার্চ ঢাকায় আসে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। ৭১ এর ১৬ মার্চ শুরু হয় আলোচনা। ১১টার আগেই হাজার হাজার লোক বঙ্গবন্ধুর বাসায় চলে আসেন। প্রায় ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু তাঁর ব্যবহৃত সাদা রঙের মাজডা গাড়ি নিয়ে বের হন- গাড়ির ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডে লাগানো ছিল কালো পতাকা এবং উইন্ড স্ক্রীনে লাগানো ছিল বাংলাদেশের গাঢ় সবুজের পটভূমিতে রক্তিম সূর্যের বুকে বাংলাদেশের স্বর্ণালি রংয়ের মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের স্বপ্নের পতাকা।
উৎসুক জনতা অপেক্ষা করছিল বঙ্গবন্ধু-ইয়াহিয়া খানের বৈঠকের ফল কী হয় তা জানতে। আলোচনা শুরু হলো- কিন্তু আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি নেই। আর অগ্রগতি হবেই বা কী করে? বঙ্গবন্ধুর মনে স্বাধীনতার মন্ত্র আর ইয়াহিয়ার মনে বাঙালি নিধন করে বাঙালির রক্তে হোলি খেলা।
ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ত্রাণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা চার জাহাজ বোঝাই গম চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস না করে করাচি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সারা দেশ।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে এখন থেকে বাঙালি মালিকানাধীন ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক কেন্দ্রের শুল্ক, কর, আবগারি কর ও বিক্রয় কর গ্রহণ করবে। কিন্তু এ সব কর স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানে জমা দেওয়া হবে না- যাতে টাকা-পয়সা পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হতে না পারে। ঢাকার শিল্পী সমাজ রাজপথে মিছিল ও সভা করে। রাস্তায়, মাঠে-ময়দানে তখন গণসঙ্গীত, নাটক, পথনাটক ও পথসভা করে চলছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বেতার-টেলিভিশন শিল্পী সংসদ, মহিলা পরিষদ প্রভৃতি সংগঠন। হাইকোর্টের আইনজীবী, বেসামরিক কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করতে থাকে।