সিগারেটের থেকেও মোমবাতি বেশি ক্ষতিকারক?

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৯:৫৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

জন্মদিন থেকে বিয়ে বাড়ি, সবখানেই সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালানোর রেওয়াজ রয়েছে। একথা ঠিক যে রংবেরঙের এইসব মোমবাতিগুলি দেখতে বাস্তবিকই অসাধারণ। কিন্তু এগুলি আদৌ কি শরীরের পক্ষে ভালো? 

গবেষণা যা বলছে, তা কিন্তু সত্যিই ভয়ের। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে এমন সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালালে ক্ষতিকর টক্সিনে সারা ঘর ভরে যায়। ফলে এর প্রভাবে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। যদিও আপাত দৃষ্টিতে শরীরের এই ক্ষয় আমাদের চোখে পরে না, ফলে আমরা জানতেই পারি না যে মোমাবাতি ধীরে ধীরে আমাদের শেষ করে দিচ্ছে। কমিয়ে দিচ্ছে আয়ু। 

প্রসঙ্গত, একাধিক গবেষণায় এও প্রামাণিত হয়েছে যে কিছু ক্ষেত্রে স্মোকিং-এর থেকেও বেশি ক্ষতি করে এইসব সুগন্ধি মোমবাতিগুলি। এখানেই শেষ নয়, বেশিরভাগ মোমমাবাতিতেই ট্রিক্য়ালেকথেন, এসেটন, জাইলিন, পেনল, ক্রেসল, ক্লোরোবেনজেন প্রভৃতি ক্ষতিকর টক্সিন থাকে, যেগুলি দীর্ঘ সময় শরীরে প্রবেশ করলে যে যে ক্ষতিগুলি হয়ে থাকে, সেগুলি হল ... 

শ্বাস কষ্ট এবং অ্যাস্থেমা
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মোমবাতি বানাতে যে মোম ব্যবহার করা হয় তাতে এমন কিছু টক্সিন থাকে, যা অ্যাস্থেমা সহ একাধিক রেসপিরেটরি প্রবলেম হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। আসলে মোমমবাতির ধোঁয়ার সঙ্গে বেরনো টক্সিন ফুসফুসের কর্মক্ষমতাকে ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়। ফলে এক সময় গিয়ে মারাত্মক ধরনের সব ফুসফুসের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

মাথা যন্ত্রণা
সুগন্ধি মোমবাতির আরেকটি ক্ষতিকর প্রভাব হল মাথা যন্ত্রণা হওয়া। এমন মোমবাতিতে থাকা বেনঞ্জিন এবং টলুয়েন নামে দুটি কেমিক্যাল ধোঁয়ার মাধ্যমে যে মুহূর্তে নাকে এসে পৌঁছায়, অমনি শুরু হয়ে যায় মাথা যন্ত্রণা। তবে সবারই যে এমনটা হয়, তা নয়। 

কিডনিতে টিউমার
বেশ কিছু মোমবাতিতে প্যারাফিন্তেল নামে একটি উপাদান থাকে। যেটি ধোঁয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ সময় শরীরের প্রবেশ করলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিছু ক্ষেত্রে কিডনি টিউমার হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই তো প্রয়োজন ছাড়া মোমবতি জ্বালাতে মানা করেন বিশেষজ্ঞরা। 

সীসা
প্রায় সব মোমবাতির পোলতেতেই সীসা থাকে, যা আগুণের সংস্পর্শে আসা মাত্র যে ধোঁয়া বেরয়, তার প্রভাবে মস্তিষ্ক, ফুসফুস এবং লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে হরমোনাল ইমব্যালেন্স হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। এবার বুঝতে পারছেন তো বুঝে শুনে যদি মোমবাতি না জ্বালান তাহলে কত ভয়ঙ্কর সব ক্ষতি হতে পারে। 

অ্যালার্জি
মোমবাতি বানানোর গায়ে সেগুলির গায়ে এক ধরনের সিন্থেটিক সেন্ট দেওয়া হয়। যে কারণে অত সুন্দর গন্ধ বেরতে থাকে মোমবাতির গা থেকে। এই বিশেষ ধরনের সুগন্ধি রেসপিরেটরি ট্রাক্টের উপর কুপ্রভাব ফেলে, ফলে প্রথমে শ্বাস কষ্ট, তারপর সারা শরীরে অ্যালার্জি বেরতে শুরু করে দেয়। প্রসঙ্গত, সবারই যে এমন সমস্যা হয়, তা নয়। এই সিন্থেটিক পারফিউমে যে যে উপদানগুলি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলির মধ্যে কোনওটির কারণে যাদের অ্যাল্য়ার্জি হয়, তাদেরই কেবলমাত্র মোমবাতি থেকে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

মোমবাতির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচার উপায়: যতটা পারবেন সুগন্ধি মোমবাতি কম ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। একান্তই যদি এমন মোমবাতি জ্বালাতে হয়, তাহলে ঘরের সব জানলা খুলে দেবেন। এমনটা করলে তবেই কিন্তু ক্ষতির আশঙ্কা কিছুটা হলে কমবে।

সূত্র: ইন্টারনেট

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত