উপকূল ছাড়িয়ে স্থলভাগে 'মোরা'

প্রকাশ : ৩০ মে ২০১৭, ১৩:৪২

জাগরণীয়া ডেস্ক

ঘণ্টায় একশ কিলোমিটারেরও বেশি বেগের বাতাস নিয়ে চট্টগ্রাম উপকূলরেখা অতিক্রম করার পর এখন স্থলভাগে উঠে এসেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোরার কেন্দ্রভাগ বা চোখ।

এর প্রভাবে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে চলছে প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, দুর্যোগপূর্ণ এই আবহওয়া আরও ১২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।   

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তাফা জানান, প্রাথমিকভাবে কুতুবদিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং গাছপালা ভেঙে পড়েছে। তবে প্রাণহানির কোনো তথ্য আসেনি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, "মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার-চট্রগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করে। ওই সময় বাতাসের গতিবেগ কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি ছিল। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে পুরোপুরি স্থলভাগে আসতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।”

মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এনডিসি তাহমিদুর রহমান জানান, ভাটার সময় ঝড়টি উপকূল অতিক্রম শুরু করায় জলোচ্ছ্বাস ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেনি।

তিনি বলেন, “সকাল থেকে প্রবল বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে। সঙ্গে প্রচর বৃষ্টি। রাস্তাঘাটে মানুষ নেই। বেশ কিছু কাঁচাঘর ও গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকালেও লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”

সাগর উত্তাল থাকায় সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অফিস চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় রয়েছে।

ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর ক্ষেত্রে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত প্রযোজ্য হবে।

এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ২৯ মে (সোমবার) বিকাল থেকেই সারা দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ। আজ ৩০ মে (মঙ্গলবার) সকাল থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠা-নামাও বন্ধ রয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা জলিল উদ্দিন ভুঁইয়া জানান, ছয় জেলায় ৩ লাখ ১৭ হাজারের বেশি লোককে রাতেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেলা ১০টা পর্যন্ত হতাহতের কোনো তথ্য তারা পাননি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত