এখন গ্রামবাসীদের বন্ধু এই হনুমান

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:১২

রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার দুইবল গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী বেলী আরা (৩৪)। একটি আম গাছের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় উপরে কিছু একটা দেখতে পান। প্রথমে তিনি সেটিকে শেয়াল মনে করেন। গাছে শেয়াল বসে আছে তা ভেবে আশেপাশের লোকজনও ডাকেন। পরে লোকজন জড়ো হলে দেখতে পান যে আসলে তা একটা হনুমান। গ্রামের মধ্যে হনুমান দেখে প্রথমে সবাই বেশ অবাক হন। 

তবে এখন অবাক হওয়ার পালা শেষ। হনুমানটি এখন আশেপাশের কয়েকটি গ্রামবাসীদের বন্ধু। গাছপালায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি হনুমান। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার কোয়েলহাট, গাল্লা, শাহাপুর, নোনাপুকুর, দুবইল গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে হনুমানটি। 

হনুমানটিকে ঘিরে উৎসুক গ্রামবাসী প্রতিদিন ভিড় করছে। অনেকে তাকে খাবারও দিচ্ছেন।

দুইবল গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি কৃষক ইউসুফ মোল্লা জানান, সপ্তা থেকে হনুমানটি গ্রামের বাঁশ ঝাড়, নিমগাছসহ বিভিন্ন গাছে অবস্থান করছে। গ্রামবাসীরা যে যেভাবে পারছেন খাবার দিচ্ছেন। গাছের নিচে খাবার দিয়ে সরে গেলে হনুমানটি নিচে এসে খাবার খেয়ে আবার উপরে উঠে যাচ্ছে।

ইউসুফ মোল্লা আরো জানান, পাশের কয়েকটি গ্রামে প্রায় এক মাস ধরে তিনটি হনুমান ঘুরে বেড়ানোর কথা শুনেছিলেন তিনি। কে বা কারা খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়ে দুইটি হনুমান মেরে ফেলেছে। এখন একটি বেঁচে আছে। 

দুবইল মোড়ের সার ব্যবসায়ী আজাদ আলী জানান, হনুমানটিকে কলা, পাউরুটি, বিস্কুট ইত্যাদি শুকনা খাবার খাচ্ছে। কেউ খাবার দিলে হনুমানটি গাছ থেকে নেমে খাবার খেয়ে আবার গাছে উঠে যাচ্ছে। 

এ অবস্থায় হনুমানটির প্রাণ হুমকির মুখের বলে তিনি জানান। কিছু কিশোর হনুমানটিকে ঢিল ছুড়ে প্রায় আহত করার চেষ্টার করে থাকে।

আজাদ আলী আরো জানান, হনুমানটি আকারে অনেক বড়। তার লেজটি পাঁচ ফিট হবে। উচ্চতা সাড়ে তিন ফিট। হনুমানটি আমাদের গ্রামের অতিথি, ও যতদিন গ্রামে থাকবে ততোদিন তাকে খাবাররসহ দেখে রাখবো।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বণ্যপ্রাণি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র দাশ জানান, হনুমানটি সম্ভব্য ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছে। দল ছুটে এসে বিভিন্ন গ্রামের গাছে গাছে বেড়াচ্ছে।

তিনি আরো জানান, হনুমান শান্ত প্রকৃতির প্রাণি। এরা মানুষের কথা ও পোষ সহজেই গ্রহন করে থাকে। এরা ভোজন প্রিয় প্রাণি। কেউ তাদের পছন্দে খাবার দিলে কাছে চলে আসে। তাদের কেউ বিরক্ত না করলে নিজেরা ইচ্ছা মত গাছের ডালে ডালে খেলা করে গাছে পাতা-লতা খেয়ে জীবন-যাপন করে থাকতে পারে। 

তবে যত দ্রুত সম্ভব তাকে উদ্ধার করেতে বন বিভাগকে খবর দিতে হবে। তা না হলে এমন পরিবেশে হনুমানটি প্রাণ হুমকির মুখে বলেও তিনি জানান। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত