‘ঘুষ দিতে ব্যর্থ হয়ে ইউনেস্কোর বিরোধিতায় সরকার’
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০১৬, ২২:৪০
রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের বিষয়ে ইউনেস্কোকে ‘ঘুষ’ দিতে ব্যর্থ হয়ে ইউনেস্কোর প্রতিবেদনকে প্রভাবিত বলছে সরকার।’ বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনের মুক্তি ভবনে ‘সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনে দমন-পীড়ন, গ্যাস সম্পদ নিয়ে আত্মঘাতী তৎপরতা এবং আশু কর্মসূচি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন তেল-গ্যাস সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ।
‘সরকারের বাইরের অন্যদের সাথে, স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এবং আন্দোলনকারীদের সাথে যাতে তারা দেখা করতে না পারে সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব রকমের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। সুতরাং আমাদের সাথে তো ইউনেস্কোর টিমের দেখাই হয়নি।’
পল্টনের মুক্তি ভবনে ‘সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনে দমনপীড়ন, গ্যাস সম্পদ নিয়ে আত্মঘাতী তৎপরতা এবং আশু কর্মসূচি’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের কাছে ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘মৈত্রী সুপার পাওয়ার থারমাল’ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথে এগোচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশে বিভিন্ন নাগরিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতা করলেও সরকার বলছে, সুন্দরবনের ক্ষতি না করেই এই কেন্দ্র নির্মিত হবে।
সম্প্রতি ইউনেস্কো এ প্রকল্পের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তা বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দেয়।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা হাছান মাহমুদ বলেন, রামপালবিরোধীদের দ্বারা ‘প্রভাবিত’ ইউনেস্কোর চিঠি।
এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের অসুবিধাটা হচ্ছে; সরকার সব সময় লবিং ফার্ম দিয়ে, বিজ্ঞাপনী সংস্থা দিয়ে, টাকাপয়সা খরচ করে, ঘুষ দিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে কেনার চেষ্টা করে। সম্ভবত ইউনেস্কোর টিমের সাথে সেটাতে ব্যর্থ হয়ে তাদের প্রতিবেদন নিয়ে মিথ্যাচার করছে।’
বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই জাতীয় কমিটি আন্দোলন করছে বলে জানান তিনি।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘রূপপুরেও সরকার বিপুল ঋণ নির্ভরতায় দেশকে আটকে এক মহাবিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পারমাণবিক বর্জ্য ফেরত নেওয়া এবং পরিশোধনের কোনো সুস্পষ্ট বিধান না রেখে সরকার রাশিয়ার সাথে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে চুক্তি করেছে।’
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জাতীয় কমিটি। এর মধ্যে আগামী ১৮ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ এবং ভারতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ‘খোলা চিঠি’ দেওয়া হবে।
২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে অক্টোবরে সারা দেশের বিভাগ ও জেলা সদরে সমাবেশ ও পদযাত্রা করা হবে বলে জানান আনু মুহাম্মদ।
জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক শেখ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকি।