বিদেশী নাগরিকদের কর ফাঁকি রোধে তথ্যভান্ডার তৈরির উদ্যোগ

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০১৬, ১৫:০৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী নাগরিকদের কর ফাঁকি রোধে তাদেরকে কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। এতে দেশে কর্মরত বিদেশী নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। ফলে কর ফাঁকি রোধের পাশাপাশি মুদ্রা পাচার ও চোরাচালানের মত ঘটনা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরকার ইতোমধ্যে বিদেশী নাগরিকদের কর ফাঁকি রোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানকে সভাপতি করে আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যায়ে একটি স্টিয়ারি কমিটি গঠন করেছে।এই কমিটি তথ্যভান্ডার তৈরিসহ আনুযঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করেছে।

এ প্রসঙ্গে বিদেশী নাগরিকদের আয়কর বিষয়ক স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সচিব ও এনবিআরের প্রথম সচিব (ট্যাক্সেস, লিগ্যাল অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) আবুল কালাম আজাদ বাসসকে বলেন, বিদেশী নাগরিকদের কর ফাঁকি ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে তথ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কর ফাঁকি রোধে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দু’টি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এ টাস্কফোর্স দু’টি মূলত মাঠপর্যায়ে কাজ করবে।

তিনি জানান, টাস্কফোর্স দু’টি এরই মধ্যে সম্ভাব্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগকৃত বিদেশী কর্মীদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ করতে একটি সফটওয়্যার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে বিদেশীদের আগমন ও বহির্গমনের সব তথ্য এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্যভান্ডারে যুক্ত হবে।

আগামী অর্থবছরে মধ্যে বিদেশী নাগরিকদের এই তথ্যভান্ডারের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এনবিআরের এই কর্মকর্তা বলেন,অনেক প্রতিষ্ঠানে বিদেশীরা কাজ করছেন। তবে দেশী প্রতিষ্ঠান তাদের সঠিক তথ্য এনবিআরকে প্রদান করছে না। এর বাইরে অনেক বিদেশী অবৈধভাবেও দেশে অবস্থান করছেন বলে তথ্য রয়েছে। ফলে বিষয়টি রাজস্ব আহরণের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এসব বিদেশীকে তথ্যভান্ডারের মধ্যে আনতে বিনিয়োগ বোর্ড ও সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ থেকে তথ্য নেয়া হচ্ছে।এর বাইরে বিমানবন্দরে আয়কর বুথ স্থাপন করে বিদেশীদের আগমন ও বহির্গমনের তথ্য নেয়া হবে।

তিনি জানান,বিদেশী নাগরিকের আয়কর নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে তাদের প্রবেশের ক্ষেত্রে স্পন্সর বাধ্যতামূলক করাসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিদেশীদের ভিসার ক্যাটাগরি পরিবর্তনে এনবিআরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আয়কর প্রত্যায়নপত্র দাখিল করতে হবে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে।

এনবিআরের একটি সূত্র বলছে, বর্তমানে ৫ লাখের অধিক বিদেশী নাগরিক দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। কিন্তু নিয়মিত কর দিচ্ছেন মাত্র ১১ হাজার। বিদেশী নাগরিকদের সঠিক হিসাব বা তথ্যভান্ডার না থাকায় তাদেরকে করের আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে এই তথ্যভান্ডার তৈরি হলে এসব বিদেশী নাগরিকদের সহজেই করের আওতায় আনা যাবে।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত