ওয়েবসাইট নিয়ে ভক্তদের মাঝে মুহম্মদ জাফর ইকবাল
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০১৬, ১৬:২৭
অবশেষে আকুল ভক্তদের মাঝে হাজির হলেন সবার প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তবে এবার ভিন্নভাবে। নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই সবার মাঝে উপস্থিত হলেন তিনি।
শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষের মাঝে থাকা এক আক্ষেপের পূরণ হল অবশেষে। ‘তোমাদের জন্য’ নামে ওয়েবসাইটটি যাত্রা শুরু হয় বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) থেকে।
অধ্যাপক জাফর ইকবাল জানিয়েছেন, বর্তমান ছেলেমেয়েরা সবাই ইন্টারনেটে কম বেশি ঢুঁ মারলেও ফেসবুকেই আসক্ত। যা সময় নষ্ট বলেই মনে করেন জাফর ইকবাল। আর যেহেতু তাঁর ভক্ত পাঠকেরা ‘জাফর ইকবাল স্যার এর লেখা’ পড়তে উন্মুখ। তাই ওয়েবসাইট নিয়েই চলে এলেন তিনি। তাঁর ছাত্ররা এই ওয়েবসাইটের ডোমেইন জোগাড় করে দিলে তাঁর মেয়েই ওয়েবসাইটটি বানিয়ে প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। শুধু তাই নয় এ ওয়েবসাইট স্মার্টফোন থেকেও দেখা সম্ভব।
ওয়েবসাইটটি বর্তমানে রয়েছে জাফর ইকবালের ‘টুনটুনি আর ছোটাচ্চু’ নিয়ে লেখা ‘একজন দুর্ধর্ষ পেপার চোর’ শিরোনামে একটি ছোট গল্প। এছাড়া রয়েছে ইউরোপ ভ্রমণের বেশ কিছু ছবি ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা তাঁর প্রকাশিত বইয়ের পিডিএফ, যা খুব সহজেই এ ওয়েবসাইট থেকে পড়া সম্ভব।
এই ওয়েবসাইটে মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর নতুন নতুন বিভিন্ন গল্পের সাথে থাকছে তাঁকে প্রশ্ন করার সুযোগ। যার উত্তর দিবেন তিনি নিজেই।
‘কেন এ আয়োজন’ এ বিষয়ে ওয়েবসাইটে তিনি লিখেছেন, ‘তোমাদের সাথে যখন আমার দেখা হতো তখন তোমাদের অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করতে, “স্যার, আপনি কেন এখন আর আমাদের জন্যে লিখেন না?”
আমি বলতাম, “কে বলে লিখি না? আমি অবশ্যই লিখি, ফেব্রুয়ারি বই মেলাতে সেগুলো বই হিসেবে বের হয়!”
তখন তোমরা বলতে, “না, না সেগুলো নয়- কিশোরদের ম্যাগাজিনে আগে যেমন লিখতেন সেরকম!”
তখন আমি মাথা চুলকাতাম, ইতি উতি তাকাতাম, উত্তর দিতে পারতাম না। আমিও লিখতে চাই তোমরাও পড়তে চাও, কোনো ম্যাগাজিনে না লিখে অন্য কোনো ভাবে কি সেটা করা যায় না?
তখন আমার মনে হল এখন তো বাংলাদেশের প্রায় সবাই ইন্টারনেটে ঢু মারে, তোমাদের বয়সী ছেলেমেয়েদের জন্যে সেখানে বিশেষ কিছু নেই, তাই তোমাদের অনেকে ফেসবুকে সময় নষ্ট করো। (হ্যাঁ, ফেসবুক মানেই সময় নষ্ট!) ইন্টারনেটে যদি আমি “তোমাদের জন্যে” একটা ওয়েব সাইট তৈরী করে সেখানে আমার লেখাগুলো পোস্ট করে দিই তাহলে কেমন হয়? তোমরা তাহলে সেগুলো পড়তে পারবে। শুধু তাই নয় যদি তোমাদের প্রশ্ন করার সুযোগ করে দিই তোমরা সেখানে প্রশ্নও করতে পারবে। আমিও তার উত্তর দিতে পারব।
আইডিয়াটা কয়দিন আমার মাথায় কুটকুট করতে লাগল, তখন আমার মনে হল, করেই দেখি না কী হয়! আমার ছাত্রেরা তখন আমার জন্যে এই সাইটটা জোগাড় করে দিয়েছে। (mzi.rocks দেখে তোমরা নিশ্চয়ই হি হি করে হাসছ কিন্তু বিশ্বাস কর এটা ছাড়া আর কোনোটা খুঁজে পাওয়া গেল না!) আমায় মেয়ে এই ওয়েব সাইটটা তৈরি করে দিয়েছে। এমন ভাবে এটা তৈরি করা হয়েছে যেন একটা স্মার্টফোন দিয়েই এটা দেখা যায়।
আমি তখন ‘টুনটুনি আর ছোটাচ্চু’ নিয়ে একটা গল্প লিখলাম, তার জন্যে ছবি আঁকলাম। তোমরা মাঝে মাঝেই আমার কার্টুন ছবি এঁকে আমাকে পাঠাও, তার একটা দিয়ে ওয়েব সাইটের ব্যানার তৈরি হল। মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা আমার বইগুলোর পি.ডি.এফ. কপি জুড়ে দিলাম। ধীরে ধীরে অন্যবইগুলোও দিয়ে দেব। কিছু ছবি না দিলে কেমন হয়? তাই জুন-জুলাই মাসে যখন ইউরোপে গিয়েছিলাম সেখানকার কিছু ছবি দিয়ে দিলাম। শুধু প্রশ্ন এবং উত্তর নেই। কেমন করে থাকবে কেউ তো এখনো এটা দেখেনি! প্রশ্ন করেনি- প্রশ্ন না থাকলে উত্তর দেব কেমন করে?
তারপর ভয়ে ভয়ে আজকে তোমাদের জানিয়ে দিলাম! তোমাদের যদি ভালো লাগে, তাহলে এটা চালিয়ে যাব। তার কারণ এটা শুধু তোমাদের জন্যে।’