র্যাম্পে হাঁটলেন গণধর্ষণের শিকার সেই মুক্তার (ভিডিও)
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:৪৪
পাকিস্তানে ১৪ বছর আগে গণধর্ষণের শিকার মুক্তারান মাই এবার নতুন করে আলোচনায় এসেছেন র্যাম্পে ক্যাটওয়াক করে। পাকিস্তানের ফ্যাশন উইকে এই প্রথম কোন ডিজাইনার এর ফ্যাশন শোতে শো স্টপার হিসেবে নির্যাতনের শিকার এমন কোন নারীকে নিয়ে আসা হলো।
পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের পোশাক পরে র্যাম্পে হাঁটেন মুক্তার। এসময় সবসময়ের মতোই মাথায় ওড়না দিয়ে রাখেন তিনি।
ডিজাইনার রোজিনা মুনিব বলেন, আমরা তার মতো একজন নির্যাতিত ও নারী অধিকার কর্মীকে এখানে নিয়ে এসেছি মূলতঃ তার বীরত্ব ও সাহসিকতার কথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য।
এর আগেও একবার রোজিনা বলেছিলেন, মুক্তারকে মডেল হিসেবে তুলে ধরার কোন ইচ্ছে আমার নেই। তিনি সাধারণতঃ বিয়ের অনুষ্ঠানে যা পরেন তাই পরবেন। আমি শুধু তাকে নিয়ে আসছি তার জীবনের গল্প সবাইকে জানানোর জন্য যা অন্য নারীদেরও সাহস যোগাবে।
মুক্তারান এর প্রতি সম্মান দেখিয়ে ঐ ফ্যাশন শোতে তার উপর নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
রোজিনা বলেন, "মুক্তারান এর জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই আমি আমার এই কালেকশন এর নাম দিয়েছি 'জীবনের রঙ'। মানুষের জীবনে কষ্ট আসে, কিন্তু সবাই সেটা অতিক্রম করে উপরে উঠার মতো এতো শক্তিশালী হয় না"।
মুক্তারান বলেন, "আমি শুধু আমার বোনদের উদ্দেশ্যে এই কথাটুকুই বলবো যে আমরা দুর্বল নই। আমাদের কাছেও মন ও মগজ দুটোই আছে। কোন অবিচার হলে আমরা যেন চুপ না থাকি, সাহস না হারাই। কারণ একদিন না একদিন সুবিচার হবেই"।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে মুক্তারের ভাইয়ের বিরুদ্ধে উঁচু জাতির এক মেয়ের সাথে প্রেমের অভিযোগ উঠার ঘটনায় ১৪ জন মিলে ধর্ষণ করে মুক্তারকে। মাত্র ১২ বছর বয়সী মুক্তারকে তখন নগ্ন করে পুরো গ্রামে ঘুরানো হয়। কিন্তু এতো নির্যাতনের পরেও চুপ করে বসে না থেকে মুক্তার এই দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে আদালত পর্যন্ত যান। সেই মামলায় ১৪ জন আসামীর মধ্যে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে আপিলে তারা মুক্তি পেয়ে যায়।
মুক্তার বর্তমানে তার নিজ জেলা পাঞ্জাবের মোজাফফরনগরে নির্যাতিত নারী ও শিশুদের জন্য একটি আশ্রয়কেন্দ্র ও মেয়েদের জন্য একটি স্কুল খুলেছেন। বর্তমানে তিনি নারী অধিকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক আইনকর্মী হিসেবে কাজ করেন।