করলা রান্না করায় স্ত্রীকে হত্যা!
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০১৭, ২৩:১৫
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় করলা রান্না করার মতো তুচ্ছ কারণে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক স্বামীর বিরুদ্ধে।
২২ জুন (বৃহস্পতিবার) রাতে উপজেলার ফাগুয়াড় দিয়াড় ইউনিয়নে নিভৃত পল্লী নামো হাটদৌলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই নারীর নাম রুনা বেগম (২৫)।
অভিযোগ রয়েছে, হত্যার পর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেন তার স্বামী। একপর্যায়ে কৌশলে ইউপি সদস্যের হাতে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয় স্বামীকে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে বাগাতিপাড়া উপজেলার নামো হাটদৌল গ্রামের মৃত বিসারতের ছেলে আলাল উদ্দিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে একই জেলার সিংড়া উপজেলার ডাক মণ্ডপ গ্রামের আ. করিমের মেয়ে রুনার বিয়ে হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকসহ কারণে-অকারণে মারধর করতেন স্ত্রী রুনাকে। কয়েকবার পিটিয়ে তাকে বাড়ি থেকেও বের করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিসি বৈঠকও হয়েছে বলে জানা গেছে।
২২ জুন (বৃহস্পতিবার) করলা রান্না করায় রোজাদার স্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে একদফা পেটান আলাল। ঘটনার পর ওইদিন রাতে আবারো পিটিয়ে ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করে রুনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রুনার বাবা আ. করিম। তার অভিযোগ, হত্যার ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে ওড়না পেঁচিয়ে রুনা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করেন আলাল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে আলাল তার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী মারা যাওয়ার খবর দেন। ঘটনাটি জেনে আলালকে কৌশলে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেন তিনি। পরদিন আজ ২৩ জুন (শুক্রবার) দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তা নাটোর আধুনিক হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় আলালকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
তবে অভিযুক্ত আলাল স্ত্রীকে প্রায়ই নির্যাতনের কথা স্বীকার করে জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় করলা রান্নার অপরাধে স্ত্রী রুনাকে মারধর করে বাড়ির বাইরে চলে যান। রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে রুনাকে ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলতে দেখে তাকে দ্রুত নামিয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে ভয় পান। পরে ইউপি সদস্যের কাছে গিয়ে ঘটনা জানান।
এ ব্যাপারে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, নিহতের বাবা আ. করিম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে তার গলায় দাগ পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।