তনুর ডিএনএ রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত
প্রকাশ : ১৭ মে ২০১৬, ১৩:২৭
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। তার ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সংস্থা সিআইডির বিশেষ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ সোমবার (১৬ মে) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার পর শতভাগ নিশ্চিত হয়েছি, সে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।’
সিআইডি সূত্র জানায়, তনুর পোশাক ও অন্তর্বাসে তিনজনের বীর্যের আলামত মিলেছে। সংস্থাটির ঢাকাস্থ পরীক্ষাগারের প্রতিবেদনে এ আলামত পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তনুর মৃতদেহ থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে চারজনের ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি তনুর নিজের। তিনটি পৃথক তিনজনের।
সোমবার তনু হত্যা মামলা বিষয়ে সিআইডি কুমিল্লা বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম খান বলেন, ‘আসামি শনাক্ত করতে আমরা মোটামুটি কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছি।’
গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসে তনুর লাশ পাওয়ার পর থানা পুলিশ ও ডিবির হাত ঘুরে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া সিআইডি কয়েক দফায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসে।
গত ৪ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু ডিএনএ রিপোর্টে তনুকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে সিআইডি বিষয়টি নিশ্চিত করায় সকল বিতর্কের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
এর আগে তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের ৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তনুর কাপড়, দাঁত, নখের ডিএনএ ও ফিঙ্গার প্রিণ্টের প্রতিবেদন চেয়ে সিআইডি’র কাছে চিঠি পাঠায়।
ওই চিঠিতে সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য পুনরায় কবর থেকে লাশ উত্তোলনের পর তদন্ত সংস্থা সিআইডি কর্তৃক সংগৃহীত নমুনার ৪টি দাঁত, ৪টি ভেজাইন্যাল সোয়াব, ডিএনএ অ্যানালাইসিস ও পরীক্ষার প্রতিবেদন চাওয়া হয়।
সোমবার রাতে কুমিল্লা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের আরও জানান, ফরেনসিক বিভাগ এতো দিন ডিএনএ রিপোর্টের জন্য ২য় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিতে দেরি করছিলো। এখন ডিএনএ রিপোর্ট হাতে আসায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট খুব তাড়াতাড়িই দেয়া যাবে।
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পর সারাদেশেই শুরু হয় তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। সম্প্রতি তনুর মা অভিযোগ করেন, সেনানিবাসের একটি অনুষ্ঠানে গান গাইকে অস্বীকার করার কারণেই তনুকে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের নিজ বাসার কাছে সোহাগী জাহান তনুর লাশ পাওয়া যায়। প্রথম ময়নাতদন্তে তনুকে ধর্ষণের আলামত মেলেনি ও হত্যার কারণ পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়। তার প্রতিবেদন এখনো দেওয়া হয়নি।