আতিয়া মহলে অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০১৭, ১৮:১৩
সিলেটে দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার ‘আতিয়া মহল’ এর জঙ্গি আস্তানায় অভিযান এ পর্যন্ত দু’জন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যৌথ বাহিনী।
২৬ মার্চ, রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।
তবে ভেতরে আরও কয়েকজন জঙ্গি রয়েছে বলে যৌথ বাহিনীর প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে।
ভেতরকার অবস্থা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “দুজন নিহত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত দেখতে পেয়েছি। একজনের দেহে সুইসাইড ভেস্ট লাগানো ছিল। দুজনকে দৌড়ানো অবস্থায় দেখে আমাদের কমান্ডোরা ফায়ার করেছে। তারা পড়ে যাওয়ার পর একজন সুইসাইড ভেস্ট বিস্ফোরণ ঘটায়।”
ভেতরে আর কতজন আছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এক বা একাধিক ভেতরে আছে। তারা খুব সতর্ক, সুইসাইড ভেস্ট পরে আছে।”
নিহত দুজন পুরুষ বলে জানানো হয়েছে। ভেতরে থাকা জঙ্গিদের মধ্যে নারী রয়েছে কি না- প্রশ্নে ব্রিগেডিয়ার ফখরুল বলেন, “মহিলা আছে কি না, আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি।”
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল, ভেতরে জিম্মি থাকা বাড়িটির বাসিন্দাদের উদ্ধার করে নিরাপদে বাইরে নিয়ে আসা। আমরা সেটি সফলভাবে করতে পেরেছি। এখনকার লক্ষ্য হচ্ছে, অভিযান পরিচালনাকারী নিজেদের সদস্যদের নিরাপদে রেখে জঙ্গি নির্মূল করা। তবে জঙ্গিরা পুরো ভবনের বিভিন্ন স্থানে আইইডি পেতে রেখেছে। ফলে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় অভিযান চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সতর্কভাবে এগোতে হচ্ছে, অভিযানও শেষ করতে সময় লাগছে’।
ব্রিগেডিয়ার ফখরুল বলেন, “তাদের কাছে স্মল আর্মস আছে, এক্সপ্লোসিভ আছে, আআইডি আছে, তারা ওয়েল ইকুইপড। আমরা যে গ্রেনেড ছুড়েছি, তারা সেগুলো ধরে উল্টা আবার আমাদের দিকে নিক্ষেপ করেছে। টিয়ার শেল ছুড়লে যে আগুন জ্বালাতে হয়, তারা এসব টেকনিক জানে।”
নানা স্থানে বিস্ফোরক স্থাপন করে জঙ্গিরা বাড়ি দুটিতে অভিযান চালানো কঠিন করে তুলেছে বলে জানান ব্রিগেডিয়ার ফখরুল।
“তারা আইইডি ফিক্স করেছে, তাতে ধারণা করা যাচ্ছে, জঙ্গি যারা আছে তারা ভাল জ্ঞান রাখে কীভাবে দুর্গম করে তুলতে হয়।
সুতরাং অপারেশন শেষ করাতে ভালো ঝুঁকি আছে, এজন্য সময় লাগছে।”
তবে সবকিছু সামলে শিগগিরই অভিযান শেষ করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই সেনা কর্মকর্তা।
কখন নাগাদ অভিযান শেষ হতে পারে- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের কমান্ডোরা চেষ্টা করছে। নিশ্চিত করে বলতে পারছি না যে অপারেশন কখন শেষ হবে। অপারেশন পরিচালনা বেশ ডিফিকাল্ট হচ্ছে। আজ সকাল থেকে বিভিন্ন টেকটিক অ্যাপ্লাই করছিলাম, রকেট লঞ্চার ব্যবহার করে হোল তৈরি করে… সুবিধা হচ্ছিল না। পরে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করি। তাতে জঙ্গিরা কিছুটা অসুবিধায় পড়ে। তাদের ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়”।
তিনি বলেন, ‘অভিযান শেষ করেই বিস্তারিত জানাবো’।
ভবন হেলে পড়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, “ভবন হেলে পড়ার খবর ঠিক নয়, ফায়ারিংয়ে সমস্যা হওয়ায় আমরা একটি দেয়াল ফেলে দিয়েছি। কোনো টিনের চালও উড়ে যায়নি।”
সেনাবাহিনীর কেউ হতাহত হয়নি বলেও জানান ব্রিগেডিয়ার ফখরুল।