সাঁওতাল পল্লীতে হামলায় ঘটনায় গ্রেপ্তার ১
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০১৭, ১৫:২৫
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, ভাংচুর, আগুন ও গুলি করে তিন সাঁওতালকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় মোজাম মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার রাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোজাম মিয়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার উচামারি গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, ভাংচুর, আগুন ও গুলি করে তিন সাঁওতালকে হত্যার ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় সাঁওতালদের পক্ষে দুটি মামলা দায়ের হয়। এরমধ্যে একটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি মোজাম মিয়া। গোপন খবরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার বিকালের মধ্যে মোজাম মিয়াকে গোবিন্দগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে।
প্রসঙ্গত, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ১৯৬২ সালে আখ চাষের জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ১ হাজার ৮৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ওইসব জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ আখ চাষ না করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর কাছে লিজ দিয়ে দেয়। তারা লিজ নেওয়ার পর ওইসব জমিতে তামাক, ধান, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করতে থাকে। এছাড়া এসব জমিতে ১২টি পুকুর খনন করে মাছ চাষ করা হয়।
এদিকে, মিলের জমিতে আখ চাষ না হওয়ায় দুইবছর আগে এসব জমি বাপ-দাদার জমি ফেরৎ দেওয়ার কথা বলে প্রভাবশালী নেতারা এসব সাঁওতাল সম্প্রদায়ের অসহায় লোকজনকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করেন। গত বছরের ৬ নভেম্বর আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ-শ্রমিক ও সাঁওতালদের মধ্যে ত্রি-মূখী সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল নিহত ও পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। এরপর আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় সাঁওতালদের বসতি। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি ও সাঁওতালদের পক্ষ থেকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়।