শ্রাবণ প্রকাশনীকে নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সমাবেশ
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৮:০৪
আগামী দুই বছরের জন্য একুশে বইমেলায় কোনও স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে না সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা শ্রাবণ প্রকাশনীকে। ‘একাডেমির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা’ করায় ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে বইমেলা কমিটির সচিব জালাল আহমেদ জানিয়েছেন।
এদিকে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী ও নাগরিকরা।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলা একাডেমির সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, গবেষক ও কথা সাহিত্যিক দীপংকর গৌতম, লেখক রাখাল রাহা, অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, সাবেক ছাত্রনেতা শরীফুজ্জামান শরীফ, ব্লগার আরিফ জেবতিক, শিক্ষক অভিনু কিবরিয়া ইসলাম প্রমুখ।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবিন আহসান বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে আমি কী বিষয়ে কথা বলব সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আমার আছে। এমন তো নয় যে আমি মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাবিরোধী কোনো কথা বলেছি! বইমেলার মতো মুক্তবুদ্ধির চর্চার একটি ক্ষেত্র থেকে কেবল বই প্রকাশের অপরাধে একজন প্রকাশককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হলো। আমি মনে করেছি এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত তাই প্রতিবাদ করেছি’
রবিন আহসান আরো বলেন, ‘যেকোনো অপরাধে রাষ্ট্র কাউকে গ্রেপ্তার করতেই পারে। কিন্তু বাংলা একাডেমি বইমেলার মতো শিল্প সাহিত্যের পীঠস্থান থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া এটা একজন প্রকাশকের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে বলেই মনে করেছি।’
রবিন আহসান প্রশ্ন করেন, বইমেলা চলার সময় কেন প্রকাশককে গ্রেপ্তার করা হবে? তিনি তো আর চোর ডাকাত নন। একজন সম্মানিত প্রকাশক।
‘বই নিষিদ্ধ করা হলে আইন অনুযায়ী তা জব্দ করা হোক। স্টল বাতিল করা হোক। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলা একাডেমি তা করতেই পারে। কিন্তু একজন বৃদ্ধ প্রকাশককে বইমেলা থেকে কোমরে দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে হয়েছে।’
‘আর তাই প্রতিবাদ করেছি। শাহবাগে দাঁড়িয়ে কথা বলেছি। টেলিভিশনের টক শোতে কথা বলেছি। মতামত জানিয়েছি। আর এই প্রতিবাদ করাটা যদি অপরাধ হয় আর সে অপরাধে বইমেলায় আমার অংশ নেওয়াটা বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে আমি বলব আমরা মধ্যযুগে বাস করছি।’
রবিন আহসান আরো বলেন, ‘বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের শিল্প- সাহিত্য বিকাশ এবং বিচরণের তীর্থক্ষেত্র। এটা কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। কেউ যদি স্থুল অজুহাতে আক্রোশবশত এবং ব্যক্তিস্বার্থে একে ওকে নিষিদ্ধ করেন, তবে সেটা আমাদের সাহিত্যাঙ্গনের জন্যই ক্ষতিকর।’
রবিন বলেন, ‘বই মেলায় স্টল পাওয়ার আবেদন করতে ফরম তুলতে গিয়ে জানতে পারি আমাদের আগামী দুই বছর কোনো স্টল দেওয়া হবেনা। তবে এবিষয়ে আগে থেকে কোনো নোটিস পাইনি।’