নির্বাচন মানেই ফাইট: আইভী

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:২১

জাগরণীয়া ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, নির্বাচন মানেই ফাইট। আমি ফাইট করেই জিতব। আর ফল যা-ই হোক, মেনে নেবেন।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টার পর শহরের শিশুবাগ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন। 

ভোট দেওয়ার পর আইভী বলেন, আমার তো মনে হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে এবং তাদের তৎপরতা শুধু ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার পরে না, ভোট গণনা থেকে শুরু করে কাল পর্যন্ত যেন অব্যাহত থাকে।

এর আগে সকাল নয়টার দিকে শহরের দেওভোগ এলাকার বাড়ি থেকে আইভী বের হন। বাবার কবর জিয়ারত করে ভোটকেন্দ্রে যান তিনি।

শিশুবাগ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আইভী যখন পৌঁছান, তখন সেখানে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন আইভীর সমর্থকেরা। এক সমর্থকের পরনে ছিল আইভীর ছবিসহ টি-শার্ট। তাতে লেখা, ‘নাই শঙ্কা, নাই ভয়, নগর হবে শান্তিময়’। 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।। এবারই প্রথম স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থীরা সরাসরি জাতীয় রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন।

নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারব এই আশা রাখছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলেছি কোনো ধরনের অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ছাড়া নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৩৭টিতে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।’

মেয়র পদপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হলেও আরো পাঁচজন একই পদে লড়ছেন। তাঁরা হলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল (কোদাল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ (পাখা), ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি ইজহারুল ইসলাম (মসজিদের মিনার), এলডিপির কামাল প্রধান (ছাতা), কল্যাণ পার্টির মেয়র প্রার্থী রাসেল ফেরদৌস সোহেল মোল্লা (হাতঘড়ি)। এছাড়া সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নাসিকে ২৭টি ওয়ার্ডে ১৭৪টি কেন্দ্র ও ১ হাজার ৩০৪টি বুথ রয়েছে। মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮ জন।

নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন প্রায় ৪ হাজার কর্মকর্তা। আর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৯ হাজার সদস্য।

এর আগে ২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল—এ তিনটি পৌরসভা বিলুপ্ত করে ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। একই বছর ৩০ অক্টোবর প্রথমবারের মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে সিটির প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী, যিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত