২ স্কুলছাত্রী হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দায়ের
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ২৩:০৮
মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রী সুমাইয়া ও হ্যাপি আক্তার হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দায়ের করেছে পুলিশ।
গত ১১ নভেম্বর আট জনকে আসামি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মাদারীপুরের একটি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলেও এতদিন তা প্রকাশ করা হয়নি। অভিযোগপত্রে আসামিরা হলেন রানা নার্গাসি, মেহেদী, সজীব, আলামিন, নাজমুল, সাজন বেপারী, উজ্জ্বল সিকদার ও রাকিব সিকদার। এদের মধ্যে নাজমুল এজাহারভুক্ত আসামি নন। পুলিশের তদন্তে তার নাম এসেছে।
প্রথমে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাদারীপুর মডেল থানার পরিদর্শক মো. শাহজাহানকে। পরবর্তীতে সিআইডি তদন্তভার গ্রহণ করে। সিআইডির পরিদর্শক বেলাল কাজী, বশির আহম্মেদ ও সিরাজুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন।
পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদনে বিষপানে মৃত্যু হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত করেও এ বিষয়টি পাওয়া গেছে। ওই দুই কিশোরীকে বিষপান করতে যারা বাধ্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়।
আসামিদের মধ্যে উজ্জল সিকদার, সাজন বেপারী, মেহেদী ও নাজমুল পলাতক রয়েছেন। বাকিরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
ওই ঘটনায় হত্যা মামলা হলেও পুলিশের অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনায় মৃত দুই ছাত্রীর স্বজনরা অভিযোগপত্রের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নারাজির প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।
মামলার বাদী সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল সিকদার বলেন, “সাত দিন আগে আইও স্যারকে ফোন করে মামলার অগ্রগতি জানতে চেয়েছিলাম। তিনি তখনও বলেছেন চার্জশিট এখনও দেওয়া হয়নি। অথচ এক মাস আগে গোপনে চার্জশিট আদালতে দাখিল করেছেন। চার্জশিটের কপি তোলার জন্য কোর্ট পরিদর্শকের কাছে গেলে তিনি আমাদের চার্জশিট দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন। সিআইডি কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে হত্যা মামলাটি আত্মহত্যার মামলায় পরিণত করে চার্জশিট দিয়েছেন। আমরা এ চার্জশিট প্রত্যাখান করছি। আদালতে নারাজি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
হ্যাপি আক্তারের মা মুক্তা বেগম বলেন, ওরা আমার মেয়ে ও তার বান্ধবীকে ধর্ষণের পর বিষ পান করিয়ে হত্যা করেছে। হাসপাতাল থেকে জনতা শিপন সিকদার ও রফিকুল ইসলামকে আটক করে পুলিশে দেয়। সিআইডির অভিযোগপত্র থেকে রহস্যজনক কারণে মূল আসামিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে, অথচ সিআইডি পুলিশ আত্মহত্যা বলে অভিযোগপত্র দিল। এ কেমন প্রহসন? আমরা এ অভিযোগপত্র মানি না। অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৩ অগাস্ট মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ও হ্যাপি আক্তার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। পরে হাসপাতালে গিয়ে স্বজনরা তাদের মরদেহ শনাক্ত করেন।
সুমাইয়া আক্তার (১৪) মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামের বিল্লাল শিকদারের মেয়ে এবং হ্যাপি (১৫) একই গ্রামের হাবিব খানের মেয়ে। তারা মাদারীপুর সদরের মোস্তফাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।