'বিমানে ত্রুটি ষড়যন্ত্র নয়, যান্ত্রিক সমস্যা'

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৩:০৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে কারিগরি ত্রুটির ঘটনাটিকে স্বাভাবিকভাবে দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার অনুসারীদের একাংশ। এই ঘটনাটি কোনো চক্রান্তের অংশ কি না- সেটি খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছেন তারা। 

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও এই দাবি জানিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী  একে চক্রান্ত হিসেবে দেখতে চাইছেন না বলে বললেন নেতাদের। 

গত রবিবার (২৭ নেভম্বর)হাঙ্গেরি সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বিমান তুর্কমেনিস্তানে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। বিমানের অয়েল প্রেসার কমে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। পরে তদন্তে দেখা যায়, বিমানের তেলের স্ক্রু ঢিলা ছিল।

রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান উড়ার আগে বরাবরই বাড়তি সতর্কতা থাকে। এই অবস্থায় এই বিমানটির তেলের স্ক্রু ঢিলা থাকবে-সেটা স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না অনেকেই।

সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাতে দেশে ফেরেন। ওই রাতেই গণভবনে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা দেখা করতে যান তার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর তাকে স্বাগত জানাতে গণভবনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলী, এ কে এম এনামুল হক শামীম, বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী প্রমুখ।

এ সময় তারা বিষয়টিকে হত্যার পরিকল্পনা হিসাবে অভিযোগ করেন তারা। নেতারা বলছেন, ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর একাধিকবার সশস্ত্র আক্রমণ করে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এগুলো ব্যর্থ হওয়ার পর এখন অন্য চক্রান্ত হতে পারে।

সেখানে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, এসব বক্তব্যের পর শেখ হাসিনা তাদেরকে বলেছেন,  অত ঘাবড়ালে চলে না। আমি এটিকে যান্ত্রিক ত্রুটি হিসেবেই দেখেছি। প্লেনে যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে।

শেখ হাসিনা জানান, বিমানের তেলের প্রেসার কমে যাওয়ার বিষয়টি তাকে সঙ্গে সঙ্গেই জানান বিমানের কর্মীরা। তিনি বলেন, আমাকে যখন বিষয়টি জানানো হয়, তখন আমিই তাদের বলি পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নিতে। আশপাশে ল্যান্ডিং করার প্রয়োজন মনে করলে, ল্যান্ডিং করে বিমানের ত্রুটি পরীক্ষা করতে। এরপর বিমান থেকে যখন আমাকে ল্যান্ডিংয়ের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়, তখন আমিই তাদের ল্যান্ডিং করতে বলি।

গণভবনে উপস্থিত কয়েকজন নেতা জানান, হাঙ্গেরি সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর তাকে চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন মনে হয়নি। কিন্তু দলের কয়েকজন নেতা বিমানে ত্রুটির প্রসঙ্গটি তোলেন। বিমানে কোনো দুর্ঘটনা হয়নি জানিয়ে তারা এ জন্য আপার দীর্ঘায়ু কামনা করে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে কথা বলেন।

এ সময় একজন নেতা ঘটনাটি ষড়যন্ত্র কি না তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি যান্ত্রিক ত্রুটি। এই ঘটনাকে অন্যভাবে দেখার কিছু নেই। তিনি বলেন, মৃত্যু মাথায় নিয়েই আমি চলি। মৃত্যু যখন কপালে লেখা আছে, হবে। আমি তা নিয়ে ভাবি না। মৃত্যুর ভয়ে তো আর কাজ বন্ধ করে রাখা যায় না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত