‘একাত্তরেও এভাবে ঘরবাড়ি পোড়ায়নি কেউ’

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০১৬, ১৭:১৬

জাগরণীয়া ডেস্ক

গত ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ও সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের গুলিতে নিত হন ৩ জন সাঁওতাল। ঘরবড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয় তাদের। তারপর থেকে খোলা আকাশের নিচেই ঠাঁই নিয়েছেন অনেকে। তাদেরই একজন বেওয়া সরেন (৬৫)।

 এভাবেই নিজের আকুতির কথা জানাচ্ছিলেন বেওয়া সরেন (৬৫)।

মাদারপুর গ্রামের বেওয়া সরেন বলেন, "একাত্তরে তো যুদ্ধ দেখেছি। তখনও এভাবে ঘরবাড়ি পোড়ায়নি কেউ"।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাঁথা বালিশ তোশক সব পুড়ে গেছে। দুটো মুরগী ছিল, একটা ছাগলও ছিল, সব লুট হয়ে গেছে। চাল নাই, চুলো নাই-কোথায় যাব?’

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধা বলেন, "এমন কষ্ট কখনই পাইনি বাপু। শাকিল কইলো ঘর তুলো। তুললাম। হুট কইরা কয়, ঘর নামাও। ধার দেনা করে ঘর তুলিছিলাম। হুট করি নামবো ক্যামতে? আমার তো দশটা ঘর নাই"।

তিনি বলেন, "এই জমি আমাগো বাপের আছিল। পাকিস্তান পিরিয়ড সরকার কয়েছিল, আঁখ না হইলে তোমরা জমি ফিরত পাবা। কিন্তু এখন আঁখও হয়না। জমিও ফিরত দেয় না"।

অশ্রুসজল কন্ঠে বেওয়া সরেন বলেন, "আমরা তো মানুষ। প্যাটে খিদা আমাদেরও লাগে। কদিন না খেয়ে থাকবো? গত সাতদিনে ভাত খ্যায়েছি চার বার। পাড়া থেকে ওরা বের হতে দেয় না। কাজও করতে পারিনা। বের হলেই ওরা মারবে বলেছে। কিন্তু কী করব? ক্ষুধার জ্বালা সইতে পারছি না আর। এবার মুক্তি দাও। শুধু পাড়া থেকে বের করে দাও। কথা দিচ্ছি, ভারত চলে যাব। এ দেশে আর ফিরব না"।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত