‘সব ব্লগার হত্যার নির্দেশদাতা মেজর জিয়া’
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০১৬, ১৬:৩৩
দেশে এ পর্যন্ত যত ব্লগার হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তার সবগুলোই হয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতা চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের নির্দেশে।
শনিবার (১২ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন এ তথ্য জানান।
প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন ও ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় হত্যার ঘটনায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর কমলাপুর থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি দীপন ও নিলয় হত্যার সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম খাইরুল ইসলাম (২৪)। তিনি জামিল, রিফাত, ফাহিম ও জিসান নামেও পরিচিত। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার চণ্ডীপুরে।
আবদুল বাতেন জানান, খাইরুলকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে এক ‘বড় ভাই’ মেজর জিয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তার মাধ্যমেই তিনি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দেন। ২০১৪ সাল থেকে সংগঠনের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করে আসছিলেন তিনি। তিনি ইন্টারনেটে নজরদারি করতেন। তথ্য বিশ্লেষণ করতেন। সম্ভাব্য টার্গেটের বিষয়ে বড় ভাইকে তথ্য জানাতেন। এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ‘টার্গেট’ ঠিক করতেন বড় ভাই। পরে টার্গেটের বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হতো। বড় ভাইকে তা জানানো হতো।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার আরো বলেন, ব্লগার হত্যার প্রত্যেকটি ঘটনাই জিয়ার নির্দেশে হয়েছে। হত্যা-সংক্রান্ত বিভিন্ন দায়িত্ব সদস্যদের মধ্যে তিনিই ভাগ করে দিতেন।
চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখার নেতা। তিনি ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সেনা অভ্যুত্থানে প্ররোচনা চালিয়ে ব্যর্থ হন। এরপর থেকে তিনি পলাতক। তাকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।
আবদুল বাতেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে খাইরুল জানিয়েছেন, চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার নির্দেশেই দীপন ও নিলয়কে হত্যা করা করা হয়।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর দীপনকে ও ৭ আগস্ট ব্লগার নিলয়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। হত্যার পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (আনসার আল ইসলাম) ওই খুনের দায় স্বীকার করে। এ হত্যাকাণ্ডের পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।