‘রিফাত হত্যার আসামীরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে’

প্রকাশ : ২৮ জুন ২০১৯, ১১:৩৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটিকে খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে আসামীরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছে হাইকোর্ট।

২৭ জুন (বৃহস্পতিবার) বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ হত্যাকাণ্ডের প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। পরে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেন।

আদালত রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, ‘আইজি সাহেবকে বলেন আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে, বর্ডার ক্রস করতে না পারে। এজন্য সীমান্তে অ্যালার্ট জারি করতে বলবেন। আদালত বলেছেন, প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারলো। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসলো না। ভিডিও করলো, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসলো না। এটি জনগণের ব্যর্থতা! এই সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে কে ? দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ প্রতিবাদ করলো না। পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না।’

আদালতে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার আদালতে বলেন, ইতোমধ্যে মামলার পর একজন আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যেক আসামিকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। জেলার ডিসি-এসপি ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য দেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল।

বর্বরোচিত নির্মম এ ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে এনে আইনজীবী ব্যারিষ্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এমন অপরাধের ঘটনার বিচার যদি কোনো কারণে বিলম্ব হয় ও বিচারহীন হয়, তাহলে আরও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে বিচার হবে আশা করছি।

উল্লেখ্য, বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে গত ২৬ জুন সকালে রিফাত শরিফকে কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। এসময় তার স্ত্রী বাধা দিয়েও তাদের আটকাতে পারেননি।

নিহত রিফাত শরিফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হালিম দুলাল শরিফ। 

এদিকে, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সন্ত্রাসী দুই যুবক ধারালো দা দিয়ে একের পর এক কোপাতে থাকে রিফাতকে। এ সময় শরিফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুই সন্ত্রাসীকে বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ভয়াবহ এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিক্রিয়া দিয়ে যাচ্ছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। তারা এ ঘটনার নিন্দাসহ দোষীদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করেন। 

হামলার পর রিফাতকে গুরুতর আহতবস্থায় প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে আশঙ্কাকাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভর্তির এক ঘণ্টা পর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শরিফের মৃত্যু হয়।

এঘটনায় বুধবার রাতে নিহতের বাবা বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত