সুবর্ণচরে গণধর্ষণ: সাত আসামি রিমান্ডে

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:৫৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটের দিন রাতে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা রহুল আমিনসহ সাত আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। জেলার পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

৬ জানুয়ারি (রবিবার) জেলার ২ নম্বর আমলী আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নবনিতা গুহ এ রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চরজব্বার থানার পরিদর্শক ইব্রাহিম খলিল আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার সাত আসামিরা হলেন- সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন, বাদশা আলম বাসু, জসিম উদ্দিন, হাসান আলী বুলূ, মো. সোহেল, স্বপন ও বেচু।

উল্লেখ্য, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেয়ায় ভোটের দিন রাতে স্বামী ও চার সন্তানকে বেঁধে চল্লিশোর্ধ্ব ঐ নারীকে আওয়ামী লীগের ১০/১২ কর্মী মিলে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী ঐ নারী জানান, ভোটের দিন আওয়ামী লীগের কর্মীরা নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য জোর করছিল কিন্তু আমি তাদের কথা না শুনে ধানের শীষে ভোট দিই। এ নিয়ে আমাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে ঐ দিন মধ্যরাতে ১০/১২ ঘরের বেড়া কেটে হানা দেয় এবং আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও অকথ্য নির্যাতন চালায়। এ ব্যাপারে মুখ খুললে স্বামীকে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয় তারা। 

ওই নারীর স্বামী জানান, ৩০ ডিসেম্বর রাতে তার স্ত্রীকে মারাত্মক জখম করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখে এবং ৪০ হাজার টাকা, সোনার গয়না ও অন্যান্য দামী জিনিসপত্র নিয়ে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়।

প্রতিবেশীরা তাদের চিৎকার শুনে প্রথমে একজন ডাক্তার ডেকে আনেন কিন্তু ঐ নারীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী রুহুল আমিনসহ ১০ জনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় মামলা দায়ের করলে রহস্যজনকভাবে পুলিশ রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে দেয়। 

গত ২ জানুয়ারি (বুধবার) চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঐ নারীকে দেখতে গেলে ভুক্তভোগী ঐ নারী বলেন, রুহুল আমিনের সাঙ্গপাঙ্গরাই আমার উপর নির্যাতন চালিয়েছে। কিন্তু পুলিশ এজাহার থেকে রুহুল আমিনের নামই কৌশলে সরিয়ে দিয়েছে। ডিআইজি এ সময় তাকে আশ্বস্ত করেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে রুহুল আমিনের নাম মামলা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে-এ ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে এবং রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানানো হয়।

এরপরই ২ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ৫ জানুয়ারি (শনিবার) দিবাগত রাতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার ৯ নম্বর আসামি সালাউদ্দিনকে ফেনী জেলার সুলতানপুর গ্রাম থেকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে এই মামলায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত