শিক্ষক কৃষ্ণা কাবেরী হত্যার আসামি জহিরুলের ফাঁসি
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৪৩
রাজধানীর আদাবরে কলেজ শিক্ষক কৃষ্ণা কাবেরী হত্যায় জড়িত একমাত্র আসামি গুলশানের একটি ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপক এম জহিরুল ইসলাম পলাশের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।
৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন। সেই সাথে আসামির বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা জরিমানাও করেছেন বিচারক।
এছাড়া ওই ঘটনায় কৃষ্ণা কাবেরীর স্বামী ও দুই সন্তানকে হত্যা চেষ্টায় গুরুতর জখম করার অপরাধে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো একবছর কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
উল্লেখ্য, প্রায় চার বছর আগে ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের ভাড়া বাসায় হামলায় মারাত্মক আহত ও দগ্ধ হয়ে পরদিন হাসপাতালে মারা যান আদাবরের মিশন ইন্টারন্যাশনাল কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক কৃষ্ণা কাবেরী মণ্ডল (৩৫)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার স্বামী সীতাংশু শেখর বিশ্বাস ও এই দম্পতির দুই মেয়ে শ্রাবণা বিশ্বাস শ্রুতি, অদ্বিতীয়া আরভি বিশ্বাস অদৃতি।
মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ সীতাংশু শেখর বিশ্বাস নিজের জন্মদিনে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের ভাড়া বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আসামি হাজী আহমেদ ব্রাদার্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলাম পলাশকে। শেয়ার ব্যবসার সূত্র ধরেই তাদের পরিচয় এবং হাজী আহমেদ ব্রাদার্স সিকিউরিটিজের মাধ্যমে বিও অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। সেখানে আট লাখ টাকা ছিল। মূলত টাকা আত্মসাত করার জন্য জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসে শেখরের জুসে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে হাতুড়িপেটা করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জহিরুল ইসলাম। এসময় স্ত্রী কৃষ্ণা বাধা দিতে স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই এলোপাতাড়িভাবে মারা শুরু করেন আসামি জহিরুল। এক পর্যায়ে জন্মদিনের মোমবাতি থেকে কৃষ্ণার শাড়ি ও ঘরে আগুন ধরে যায়। দগ্ধ কৃষ্ণাকে রাতে হাসপাতালে ভর্তি করার পর পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় কৃষ্ণার দুই মেয়েও হাতুড়ির আঘাতে আহত হন।
এ ঘটনায় সিতাংশু শেখরের তার বড় ভাই সুধাংশু শেখর বিশ্বাস গুলশানের ব্রোকারেজ হাউজ হাজী আহমেদ ব্রাদার্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলাম পলাশকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি জহিরুল ইসলাম। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে তদন্ত চালিয়ে ২০১৬ সালের ৩০ মে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৩ জানুয়ারি দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন আদালত। বর্তমানে আসামি এম জহিরুল ইসলাম পলাশ জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।