কুড়িগ্রামে বন্যায় ২ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০১৬, ১৯:১৬
কুড়িগ্রামে ধরলার নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ১০০ সেন্টিমিটার বিপদসীমা ও ব্রহ্মপুত্রে পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সরকারি হিসেব মতে জেলার ৯ উপজেলায় ১ লাখ ১০ হাজার ৪৭৬ পরিবারের ৪ লাখ ২৯ হাজার ৪৮৫ জন মানুষ পানিবন্দী হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় উপজেলাগুলোতে ৪শ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও ৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার কুমরপুর এলাকায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী মহাসড়কে পানি ওঠায় ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলাসহ বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বাঁধ ধসে যাওয়ায় ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাট হুমকীর মুখে পড়েছে। ২ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। নিমজ্জিত রয়েছে আমন বীজতলা, পাট ও সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের মাঠ।
বানভাসীরা বাড়িঘর ছেড়ে পাকা সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ খাদ্য সংকট রয়েছে। সরকার থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ বন্যা কবলিত বেশিরভাগ মানুষদের।
সদর উপজেলার মধ্যকুমরপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আমিরুল ইসলাম জানান, সোমবার (২৫ জুলাই) হঠাৎ করে মাদ্রাসার মাঠে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি উঠে যাওয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মাদ্রাসার ঘরের মেঝে ও বারান্দায় বন্যার্তরা আশ্রয় নিচ্ছে।
গরু-ছাগলসহ পরিবার নিয়ে পাকা সড়কে আশ্রয় নেওয়া মমিনুল জানান, বাড়িতে পানি উঠার পরও খুব কষ্ট করে ৫দিন ধরে ছিলাম। পানি অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়ার ফলে আর থাকা যাচ্ছে না। তাই পাকা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি।
জেলা সিভিল সার্জন সূত্র জানায়, ৯ উপজেলায় ৮৫টি মেডিকেল টিম বন্যার্তদের জন্য কাজ করছে। জেলা প্রশাসন থেকে ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ১৯২ মেট্রিক টন চাউল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ৯ উপজেলায় ২০৮ মেট্রিক টন চাউল ও ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহফুজুর রহমান জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা ও দুধকুমারের পানিও।