ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় ফের ধর্ষণ, পরে হত্যা!
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০১৮, ২২:৩১
ধর্ষণের বিচার চেয়ে মামলা করার কারণেই ফের ধর্ষণ করা হয়েছে হবিগঞ্জ জেলার নবগঠিত শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের বিউটি আক্তারকে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিউটি আক্তারের স্বজনরা। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত একই গ্রামের মলাই মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া।
বিউটির পরিবার ও পুলিশের পক্ষ থেকে জানা যায়, বখাটে বাবুল মিয়ার উৎপাতে স্কুল ছেড়ে একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছিল কিশোরী বিউটি আক্তার। কিন্তু কাজে যাওয়া-আসার পথে তাকে ফের উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। স্বজনদের অভিযোগ এই হয়রানির অভিযোগ করায় গত ২১ জানুয়ারি বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে একমাস আটকে রেখে বিউটি আক্তারকে ‘ধর্ষণ’ করে বাবুল ও তার সহযোগীরা। পরে গত ২১ ফেব্রুয়ারি কৌশলে বিউটিকে তার বাড়িতে রেখে বাবুল পালিয়ে যায়।
এর এক সপ্তাহ পর গত ১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা ইউপি সদস্য কলমচানকে আসামি করে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। গত ৪ মার্চ আদালত শায়েস্তাগঞ্জ থানাকে এ মামলার আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। গত ১৬ মার্চ সায়েদ আলী বিউটিকে তার নানার বাড়ি লাখাই উপজেলার গুনিপুর গ্রামে পাঠিয়ে দেন। মামলা করায় ওই দিন রাতেই আবার বিউটিকে তুলে নিয়ে যায় বাবুল। এবার ধর্ষণের পর খুন করে বিউটির লাশ হাওরে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন ১৭ মার্চ সকালে হাওরে বিউটির লাশ পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় বিউটির বাবা সায়েদ আলী শায়েস্তাগঞ্জ থানায় বাবুলসহ দুজনের নাম উল্লেখ এবং আরও কয়েকজনকে আসামি করে হত্যার পর ধর্ষণের অভিযোগে ফের মামলা করেন।
সায়েদ আলী বলেন, "বাবুলের যন্ত্রণায় আমার মেয়ে স্কুলে যেতে পারতো না। পরে সে অলিপুরে এক কোম্পানিতে চাকরি নেয়। কিন্তু কাজে যাওয়া-আসার পথে তাকে ফের উত্ত্যক্ত করা শুরু করে বাবুল। এ নিয়ে বিচার চাওয়ায় আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে একমাস আটকে রেখে সে ধর্ষণ করে। পরে মামলা করায় আবার তুলে নেয় এবং ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ হাওরে ফেলে দেয়"।
এদিকে মামলার মূল আসামি বাবুল মিয়াকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় মামলা দায়েরের পর তারা বাবুলের মা কলমচান ও সন্দেহভাজন হিসেবে ঈসমাইল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু গা ঢাকা দেওয়ায় বাবুলকে তারা গ্রেফতার করতে পারেনি।
শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান জানিয়েছেন, বাবুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।