শ্রীপুরে রাস্তায় ফেলে গৃহবধূকে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৪
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ২১:০৪
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে পেটানোর ঘটনায় মামলার পর ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হল ইব্রাহিমের তৃতীয় স্ত্রী মৌরী আক্তার (২৫), মৌরী আক্তারের মা জমিলা বেগম (৪৭), মৌরী আক্তারের দুই বোন নাসরিন সরকার (১৯) ফারজানা সুলতানা (২২)। এ ঘটনায় ফরিদা বেগমের স্বামী ইব্রাহিম (৩৮) পলাতক রয়েছে।
২০ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে নির্যাতিতা স্ত্রী ফরিদা বেগম নিজে বাদী হয়ে স্বামীসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে শ্রীপুর থানায় শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, মূল অভিযুক্ত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, মুঠোফোনে ধারণ করা নির্যাতনের একটি ভিডিও তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, অটোরিকশার নিচে পড়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন মধ্য বয়সী এক নারী। পরে তার স্বামী তাকে টেনে হিঁচড়ে অটোরিকশায় তোলার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে অটোরিকশার পাটাতনে শুইয়ে দেয় ওই নারীকে। পরে নারীর নাকে-মুখে জুতাপেটা ও লাথি মারতে মারতে ঘটনাস্থল থেকে অটোরিকশায় করে নিয়ে যায়।
২০ জানুয়ারি (শনিবার) বেলা ১১টায় গাজীপুরের শ্রীপুরে জনাকীর্ণ স্থান এমসি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ইব্রাহিম (৩৮) তেলিহাটি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের গোদারচালা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ ইব্রাহিমের দ্বিতীয় স্ত্রী ফরিদা বেগম (৩৫)।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ফরিদা আক্তার জানান, গত সাত বছর আগে তিন সন্তান রেখে তার স্বামী ডা. আব্দুল জলিল মারা যান। পরে একই এলাকার ইব্রাহিম তার সম্পত্তির লোভে ফুঁসলিয়ে তাকে বিয়ে করে। ইব্রাহিমকে নিয়ে পূর্বের সংসারের সন্তানদের সঙ্গে তার মৃত স্বামীর মুলাইদ এলাকায় রেখে যাওয়া বাড়িতে বসবাস করে আসছিলে। বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সার জন্য ইব্রাহিম তার ওপর নির্যাতন করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে প্রথম স্বামীর রেখে যাওয়া মুলাইদের বাড়িটি বিক্রির জন্য ইব্রাহিম চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। সম্প্রতি ইব্রাহিম তৃতীয় আরেকটি বিয়ে করে বউ বাড়িতে এনে তুলে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন যাবৎ তাদের সংসারে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। ফরিদার ভরণ-পোষণও বন্ধ করে দেয় ইব্রাহিম।
শনিবার স্বামীর কাছে খাবারের টাকা চাইলে তিনি বেদম মারধর শুরু করে। পরে ফরিদা স্বামীর অত্যাচার থেকে পালানোর চেষ্টা করে এমসি বাজার পর্যন্ত আসলে ইব্রাহিম তার পথরোধ করে আবার বেদম মারধর করে।