ধর্ষণের বিচার করলেন কালিগঞ্জ থানার ওসি!
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০১৮, ০১:৪৯
৬ বছরের কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করে আপন চাচাত ভাই। রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে দেওয়া হয় চিকিৎসা। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করলে ওই দিন রাতেই ধর্ষককে আটক করে পুলিশ। কিন্তু পরবর্তীতে এক লক্ষ টাকায় রফাদফা করে ছেড়ে দেওয়া হয় ধর্ষককে।
শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের পূর্বপাইকাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী। তার ৬ বছরের কন্যাশিশু তারালী মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। গত ২০ ডিসেম্বর বেলা ২টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটিকে ঘরের মধ্যে ডেকে নিয়ে যায় চাচাতো ভাই মনিরুল কারিগর ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুর মা তহমিনা খাতুন দেখতে পেলে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় মনিরুল।
পরবর্তীতে ওই দিনই কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ করে শিশুটির পরিবার। তাৎক্ষণিক ওসি সুবীর দত্তের নির্দেশে সহকারী উপ-পরিদর্শক মামুনুর রহমান ধর্ষক মনিরুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর ১ লক্ষ টাকা চুক্তিতে আসামিকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়। শিশুর পরিবার আসামিদের ছেড়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে থানায় প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে তাদের বের করে দেয়।
শিশুর বাবা সাহেব আলী কারিগর বলেন, মেয়েকে নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম। তারা আসামিকে আটক করেছিলো। তবে পরে তাকে ছেড়ে দেয়।
কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ওহিদুজ্জামান বলেন, আমার কাছে এসেছিলো। থানায় ৫০ হাজার আর মেয়েটির পরিবারের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তি হয় বলে জেনেছি। সে অনুযায়ী থানায় ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আসামিকে ছাড়িয়ে নেয় কিন্ত পরিবার কোন টাকা পায়নি।
১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে কালিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রাজীব হোসেন বলেন, কেউ ধর্ষিত হয়েছে এমন কোন বিষয় আমাদের জানা নেই। তাছাড়া থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৬ জানুয়ারি রাতে ধর্ষণের মামলা রেকর্ড হয়েছে বলে নিশ্চিত করে কালিগঞ্জ থানার এস আই মামুনুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে ১৬ জানুয়ারি একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ৯। ১৭ তারিখে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবীর দত্ত বলেন, এতদিন কেউ এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি। ১৬ জানুয়ারি অভিযোগ পেয়েই আসামিকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।