মা ও শিশু হত্যা, দুজনের যাবজ্জীবন
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:০৮
কিশোরগঞ্জে মা ও ছেলেশিশুকে হত্যার দায়ে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। ১৬ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে জেলার তৃতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ আবু তাহের ওই রায় দেন।
রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি উভয় আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে অতিরিক্ত আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন বিচারক।
মামলায় সাজা পাওয়া আসামিরা হচ্ছেন নজরুল ইসলাম (৩৭) ও জুয়েল ভূইয়া (৩৫)। তাদের বাড়ি নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার আমলাব সাহাপাড়া গ্রামে। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বেতাগিয়া গ্রামের মরহুম আয়েস আলীর মেয়ে দিপালীর (২৮) কাছ থেকে আসামিরা সুদের বিনিময়ে টাকা ধার নেন। পরে ওই টাকা সময়মতো পরিশোধ না করে টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে আসামিরা টাকা পরিশোধের কথা বলে ২০০৯ সালের ২ আগস্ট কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর মাজারে দিপালীকে আসার জন্য খবর দেয়। খবর পেয়ে দিপালী ওই দিন দুপুরে তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে বশিরকে নিয়ে ওই মাজারে যান। সেখান থেকে আসামিরা দিপালীকে মাজারের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আসামিরা প্রথমে শিশু বশিরকে গলা টিপে এবং পরে দিপালীর মাথায় হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করে উভয়কে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে।
খবর পেয়ে ওই দিন বিকেলে কুলিয়ারচর থানার পুলিশ নদীর পাড় থেকে দিপালী ও শিশু বশিরের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় কুলিয়ারচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। পরে র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্প মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায়। তারা দিপালীর বাড়ি থেকে নজরুলের সুদের বিনিময়ে টাকা ধার নেওয়ার চুক্তিপত্র উদ্ধার করে এবং ২০০৯ সালের ১২ আগস্ট ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নজরুল ইসলামকে আটক করে। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং ১৪ আগস্ট বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
র্যাব-৯ ভৈরব ক্যাম্পের এসআই মো. সিরাজুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এপিপি আবদুস সালাম এবং আসামিপক্ষে রাশেদুজ্জামান এনাম ও অনামিকা রোজী মামলা পরিচালনা করেন।