ভিকারুন্নিসা ছাত্রী সাদিয়া হত্যায় মামার সাজা কমে যাবজ্জীবন
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৩:৩৪
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী সাদিয়া নওশীন প্রিয়াঙ্কা হত্যা মামলার আসামির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছে হাই কোর্ট। আসামির ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশিরউল্লাহ।
পরে বশিরউল্লাহ বলেন, এ ঘটনার প্রত্যক্ষ কোনো সাক্ষী ছিল না। তাছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় দীর্ঘ ছয় বছর ধরে আসামি কনডেম সেলে আছেন। এর বাইরে মামলার ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদনে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এসব যুক্তি বিবেচনায় নিয়ে আদালত আসামির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছে।
হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
২০০৭ সালের ১৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে ১২টার মধ্যে মগবাজারের ৫৩৬/১ পেয়ারাবাগ, নয়াটোলার বাসায় খুন হন সাদিয়া।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, আপন মামা হওয়া সত্ত্বেও রিন্টু সাদিয়াকে উত্যক্ত করতেন। এক পর্যায়ে তাকে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হয়। ঘটনা জেনে সাদিয়ার বাবা বাড়ি থেকে বের করে দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন রিন্টু। পরে ১৮ জুলাই নয়াটোলার বাসায় একা পেয়ে সাদিয়াকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পরদিন সাদিয়ার বাবা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের হিসাব রক্ষক মো. সুলতান ফারুক রমনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হন জাহিদুল হক রিন্টু। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ২৭ জুন এ মামলায় রিন্টুকে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি মামলার রিন্টুকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামির ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাই কোর্টে আসে। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিও আপিল করেন। সেই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার এ রায় দিল আদালত।