রাবি শিক্ষক জলির আত্মহত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ‘মনগড়া’ তথ্যের অভিযোগ
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:৫৫
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষিকা আক্তার জাহান জলির আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলায় পুলিশের অভিযোগপত্রে ‘মনগড়া’ তথ্য রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলার স্বাক্ষী বিভাগের সাত জন শিক্ষক।
এছাড়া অভিযোগপত্রে শিক্ষকদের যে জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর বলেও দাবি ওই শিক্ষকদের। এমনকি তারা পুলিশের কাছে কোনো সাক্ষী হিসেবে কেনো রকমের সাক্ষ্য দেননি বলে দাবি করছেন।
২১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২৩ নম্বর কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তারা।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে নিজ কক্ষে আত্মহত্যা করেন আকতার জাহান। এদিন তার কক্ষ থেকে একটি ‘সুইসাইট নোট’ উদ্ধার করে পুলিশ। আকতার জাহানের ছোট ভাই কামরুল হাসান বাদী হয়ে পরের দিনই নগরীর মতিহার থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচণা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ এই মামলার অভিযোগপত্র গত ২৫ আগস্ট আদালতে দাখিল করে। অভিযোগপত্রে আকতার জাহানের সহকর্মী ও বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমানকে একমাত্র আসামি করা হয়। সেখানে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, আবদুল্লাহ আল মামুন, সহকারী অধ্যাপক মোছা. দিল আফরোজ খাতুন, কাজী মামুন হায়দার, ড. মাহাবুবুর রহমান ও আমেনা খাতুনকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
তবে সাক্ষীরা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, অভিযোগপত্রে আমাদের সাত জন শিক্ষককের নামে ১৬১ ধারায় যে জবাববন্দি দাখিল করা হয়েছে তা সত্য নয়। নানারকম বিভ্রান্তিকর তথ্য সহযোগে তা উপস্থাপন করা হয়েছে। বস্তুত আমরা কোনো জবাববন্দি দেইনি। পুলিশ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের কারো কারো সঙ্গে কথা বলেছেন, কারো কারো সঙ্গে একবারেই কথা বলেননি। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সাত জন শিক্ষকের নামে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি অভিযোগপত্রের সঙ্গে দায়ের করা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে বলিনি বা দাবি করিনি এমন অনেক ‘মনগড়া’ তথ্য দিয়ে এই জবানবন্দি সাজানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ব্রজগোপাল কর্মকার বলছেন, তদন্ত করে আক্তার জাহানের সহকর্মী আতিকুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। তাদের দীর্ঘদিনের মোবাইলের ম্যাসেজ, কললিস্ট ঘাটাঘাটি করে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। তারই ভিত্তিতে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও বিভাগের সাতজন শিক্ষকের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সেগুলো চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। চার্জশিটে যা উল্লেখ করা হয়েছে সেটাই শেষ কথা নয়। সাক্ষীরা আদালতে যা সাক্ষ্য দিবে সেটাই রেকর্ড করা হবে।
এদিকে, আকতার জাহানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিভাগের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদ রিন্টুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, মশিহুর রহমান ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মর্তুজা নুর।
মানববন্ধন শেষে বিভাগের ১২৩নং কক্ষে আকতার জাহান জলি স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।