২১শ বছর আগে মৃত্যু, এখনো অক্ষত মৃতদেহ

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০১৭, ২০:৩৬

জাগরণীয়া ডেস্ক

অক্ষত মৃতদেহটি হলো একজন দাই রমনী। ইংরেজিতে তাকে লেডি অব দাই নামে ডাকা হতো। প্রায় দুই হাজার ১০০ বছর আগে ৫০ বছর বয়সে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়াতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই দাই রমণী। তারপরে তাঁর মমি করে কবর দেওয়া হয়। তবে এখনো অক্ষত তাঁর চুল ও ত্বক। পা ও হাতগুলো এখনো বাঁকানো যায়। ‘লেডি অব দাই’ খ্যাত এই নারীর মৃতদেহ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উত্তমভাবে সুরক্ষিত মমি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লেডি অব দাই মূলত চীনের হান রাজবংশের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব মারকুইস অব দাইয়ের স্ত্রী জিন ঝুই।  শোনা যায়, জীবদ্দশায় এই দাই রমণী বেশ কিছু অসুখে ভুগতেন। উচ্চ রক্তচাপ, আবদ্ধ ধমণী, রক্তে শর্করার আধিক্য-এসব তো ছিলই। সঙ্গে ছিল হৃৎপিণ্ডের সমস্যাও। যা এক প্রত্মতাত্ত্বিক অভিযান চলাকালে এক পাহাড়ের গুহাসমাধি থেকে আবিষ্কৃত হয়। চীনের বেশকিছু প্রদেশে এই দাই রমণীর প্রণয়গাথা এখনও অমর হয়ে রয়েছে।

রূপে তার বয়স প্রভাব ফেলেছে ঠিকই। কিন্তু এতটুকুও বিকৃতি ধরেনি লাশে। ত্বক রয়েছে যেমনটি জীবদ্দশায় ছিল নরম কোমল, ঠিক তেমনটিই। চুলে এখনও রয়েছে নিশীথ যামের ইশারা। কালের গ্রাসে কিছুই নষ্ট হয়নি।

জানা যায়, তিনি বেঁচে ছিলেন হান বংশের শাসনকালে আর হুনান প্রদেশে বসবাস করতেন। সেই প্রণয়গাথা আজও চীনা নাটক, লোকগীতির এক উজ্জ্বল সম্পদ। এভাবেই পচনহীন লাশ ছাড়াও লেডি অব দাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে রয়েছেন চীনা সংস্কৃতিতেও।

প্রত্মতাত্ত্বিকরা জানাচ্ছেন, প্রথা মেনে এই দাই রমণীকে সমাধিস্থ করার সময় ১০০টি মূল্যবান রেশম বস্ত্র, গয়নাও সমাধি দেওয়া হয়। এছাড়া রাখা হয় দাসদাসীদের ১৬০টি দারুমূর্তি। এই সবকিছুর সঙ্গে ২০টি রেশম বস্ত্রে লাশ মোড়া হয়। তারপর তা কয়লার গুঁড়ো ভর্তি চারটি কফিনে পর পর বন্ধ করা হয়। সবশেষে মাটি দিয়ে বুজে দেওয়া হয় কফিনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ছিদ্রও। যাতে তা পানি এবং বায়ুনিরোধক হয়ে থাকে।

এই প্রচেষ্টাতেই এখনো পর্যন্ত ত্বক, চুল নিয়ে অক্ষত রয়েছে দাই রমণীর লাশ। এমনকি শিরার ভেতরে রক্তও অক্ষত রয়েছে।

জানা গিয়েছে, মৃতের ব্লাড গ্রুপ ছিল এ পজিটিভ। এছাড়া তার মুখে পাওয়া গিয়েছে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে খাওয়া খাদ্যকণাও। তিনি তরমুজ খেয়েছিলেন, যার অংশও এখনো অবিকৃত।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত